চৌগাছায় আউশের আবাদে ও দামে কৃষকের মুখে হাসি

0

এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছায় আউশ ধানের বা¤পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। এখনই কাঁচা ধান মাঠেই বিক্রি করতে পারছেন সাড়ে সাত‘শ টাকা মণ দরে। এ ধান উঃপাদনে খরচ যেমন কম হয়েছে তেমনি পেয়েছেন ফলনও। উপজেলায় ১ হাজার ৪শ ৪৫ জন প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক পেয়েছেন সরকারিভাবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের বীজ ও সার।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় চলতি বছর রোপা আউশ ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় চাষ হয়েছে বেশি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৮ হাজার ৭শ ৪৩ মেট্রিক টন ধান। ফলন যেভাবে পাওয়া যাচ্ছে তা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এমন বিশ্বাস কৃষি বিভাগের। উৎপাদনে চালের হিসেবে ৫ হাজার ৮শ ২৯ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। মঙ্গলবার সরজমিনে উপজেলার পুড়াপাড়া, সুখপুকুরিয়া, চাঁদপাড়া, পেটভরা, হাকিমপুর, পাশাপোল, কুটালীপুর , আড়পাড়া, মাড়–য়াসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ভাদ্রমাস শুরু হলেও এখনও অনেক চাষি ধান কাটা শুরু করেনি। আবার কেউ ধান কেটে মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে আবার মেশিন দিয়ে ধান কেটে ক্ষেত থেকে কাঁচা ধান বিক্রি করেছেন।
এ সময় আলাপকালে চাষিরা জানালেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার তাদের আউশ ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকায় লাভ হচ্ছে এ জন্য তারা বেশ খুশি। কথা হয় আড়পাড়া গ্রামের ধান চাষি ইসমাইল হোসেনের সাথে তিনি বলেন, এ বছর প্রায় তিন বিঘা জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কম খরচে ভালো ফলন হয়েছে। ১০ কাটা জমির ধান কেটে ক্ষেত থেকেই কাঁচা ধান প্রতি মণ ৭শ ৫০ টাকা দরে ১১ মণ ধান বিক্রি করেছেন। উপজেলার পেটভরা গ্রামের ধানচাষি আব্দুর রহমান বলেন, আউশ ধান চাষে উৎসাহিত করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। তিনি বলেন, ২ বিঘা জমিতে আউশের আবাদ করেছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে সময়মতো জমি পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ করায় অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো ফলন হয়েছে। সরকারি প্রণোদনার সার বীজ পাওয়ার কারণে তার খরচও অনেক কম হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জমিতে পোকা-মাকড় দমনে পার্চিং ব্যবস্থা করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরণের পরামর্শ সেবা পেয়েছেন তিনি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় বৈশ্বিক মহামারি করোনা প্রভাবে যাতে দেশে খাদ্য সংকট সৃষ্টি না হয় সে কারণে এবার আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া আউশ আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করতে উপজেলায় ১ হাজার ৪শ ৪৫ জন প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে সরকারিভাবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। প্রত্যেক কৃষককে ৫ কেজি উচ্চফলনশীল জাতের ধানের বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সমরেন সরকার জানান, উপজেলায় আউশের আবাদ গত মৌসুমের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি বিভাগের মাঠ দিবস, প্রশিক্ষণ, উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন তৎপরতায় সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে কৃষি কার্যক্রম। ফলন ভালো, খরচ কম ও নতুন ধানের বাজারে দামও ভালো তাই কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে আউশের আবাদ।