কে এই আব্দুল গানি বারাদার?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ গত রোববার (১৫ আগস্ট) তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের তিন দিনের মধ্যেই আফগানিস্তানে ফিরেছেন সংগঠনের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লা আব্দুল গানি বারাদার। কাতারের দোহা থেকে একটি বিশেষ প্লেনে করে মঙ্গলবার আরও কয়েকজন সিনিয়র তালেবান নেতাকে নিয়ে তিনি কান্দাহারে নামেন। যুক্তরাষ্ট্রের হামলার মুখে ২০০১ সালে তালেবানের অন্য নেতাদের সঙ্গে প্রথমে কাবুল, তারপর দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন বারাদার। এরপর পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের মামলায় আট বছর তাকে কারাভোগ করতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছরের নির্বাসিত জীবন আর কারাবাসের পর মঙ্গলবার বিজয়ীর বেশে দেশে ফেরেন তিনি। তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের পর থেকেই নতুন একটি সরকার গঠনের জোর তৎপরতা শুরু হয় এবং মোল্লাহ বারাদারের আফগানিস্তানে ফেরা ইঙ্গিত করছে যে নতুন সরকারের ঘোষণা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। কাবুলে নতুন সরকার যে মূলত তালেবানের সরকার হবে বা সেই সরকারে যে তালেবানেরই একচেটিয়া প্রাধান্য থাকবে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যদিও হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা তালেবানের আমির বা শীর্ষ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে তা হলো কাবুলে আসন্ন সরকারের প্রধান হতে চলেছেন তার ডেপুটি মোল্লা বারাদার। রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর রোববার দোহায় বসে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ে তালেবানের কালেমা খচিত সাদা পতাকা সামনে নিয়ে বারাদারই যুদ্ধে বিজয়ের ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা কিন্তু হিবাতুল্লাহ আখুনজাদার কাছ থেকে আসেনি।
যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক এবং আফগান রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. ইউসুফজাই বলেন, আফগানিস্তানে তালেবানের সরকারই আসছে এবং বারাদারই যে তাদের ইসলামিক আমিরাতের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন এ নিয়ে আমার খুব একটা সন্দেহ নেই। তিনি মনে করেন, তালেবানের মধ্যে বারাদারই এখন বাকি বিশ্বের কাছে অপেক্ষাকৃত গ্রহণযোগ্য। তালেবানের বিভিন্ন অংশের সাথেও তার সম্পর্ক ভালো এবং বোঝাপড়া করে জটিলতার মীমাংসা করার ক্ষমতা তার রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই গণমাধ্যমে সিংহভাগ বিশ্লেষক সেই সম্ভাবনার কথা বলছেন। যদিও সংগঠনের আমির হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা ছাড়াও তালেবানে নেতৃত্বে আরও অন্তত দুজন অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন। এরা হলেন সিরাজউদ্দিন হাক্কানী এবং তালেবানের মূল প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা ইয়াকুব। পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে বলা হয়, আখুনজাদাকে ২০১৬ সালে তালেবানের আমির নিয়োগ দেওয়া হলেও তার ভূমিকা এবং ভাবমূর্তি এখনও একজন মৃদুভাষী ধর্মীয় নেতার। ঈদ বা রোজার আগে বিবৃতি প্রকাশ ছাড়া তার কাছে থেকে তেমন কিছু শোনাও যায় না এবং তালেবানের সামরিক বিষয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই কম বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। ড. ইউসুফজাইও মনে করেন, তালেবান তাদের ইসলামি আমিরাত প্রতিষ্ঠা করবে এবং আখুনজাদা হয়তো হবেন সেই আমিরাতের ‘সেরিমোনিয়াল চিফ (পোশাকি প্রধান)। তিনি বলেন, কিছুটা ইরানের ধাঁচে তালেবান সরকারের কাঠামো হতে পারে, যদিও ক্ষমতা থাকবে প্রেসিডেন্টের হাতে।
কেমন মানুষ মোল্লা বারাদার?
কাবুল দখলের পর অনেকের মনেই এই প্রশ্ন উঠেছে যে কেমন মানুষ এই মোল্লা আব্দুল গানি বারাদার? কীভাবে তার এই উত্থান? আর ক্ষমতা হাতে পেলেই বা তিনি কীভাবে আফগানিস্তান চালাবেন? ড. ইউসুফজাই বলেন, বারাদার কঠোর হাতে আফগানিস্তান শাসন করবেন। খুব শক্ত মনের মানুষ তিনি, খুবই শক্ত নেতা। দীর্ঘ আট বছর পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে একটুও ভেঙে পড়েননি এই নেতা। তরুণ বয়স থেকেই যুদ্ধ করছেন তিনি। প্রথমে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে, তারপর সোভিয়েত সৈন্য প্রত্যাহারের পর ছড়িয়ে পড়া গৃহযুদ্ধে অন্য প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ২০০১ সালে আফগানিস্তান থেকে তালেবানের উৎখাতের পর পাকিস্তানে এলেও আমেরিকানদের ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন। সেখানে আট বছর কারাভোগও করেছেন তিনি। ফলে আপাতদৃষ্টিতে যে মানুষটি এখন ঠাণ্ডা মাথার একজন কূটনীতিক, যিনি দোহায় বসে নানা দেশের সরকারের সাথে আপোষ মীমাংসা করছেন, বিদেশ সফর করছেন এবং যার আড়ালে রয়েছে দীর্ঘ লড়াইয়ে সংগ্রাম করা শক্ত একজন যোদ্ধা। তালেবানের ভাষায় মুজাহিদীন, তিনি অবশ্যই অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন সেটাই স্বাভাবিক।
তালেবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা
আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের নথি অনুযায়ী, মোল্লা বারাদারের জন্ম আফগানিস্তানের উরুযগান প্রদেশের উইটমাক নামের একটি গ্রামে। তবে তিনি বড় হন আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহারে। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন। জাতিগত পশতুন বারাদার ১৯৭০ ও ৮০’র দশকে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সৈন্যদের তাড়াতে ১০ বছর যুদ্ধ করেন। এরপর আফগান গৃহযুদ্ধ চলার সময় মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের নেতৃত্বে ১৯৯৪ সালে যে কয়েকজন পশতুন মুজাহিদীন তালেবান প্রতিষ্ঠা করেন, মোল্লা বারাদার ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। মোল্লা ওমরের ডান হাত ছিলেন তিনি। জানা যায়, তাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্কও ছিল। মোল্লা ওমরের বোনকে বিয়ে করেন বারাদার। ১৯৯৬ সালে যখন তালেবান কাবুল দখল করে, তখন সেই সরকারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন মোল্লা বারাদার। ২০০১ সালে আমেরিকার হামলায় তালেবান ক্ষমতা হারানোর আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরে উপমন্ত্রী। আমেরিকানদের তাড়া খেয়ে অন্য অনেক তালেবান নেতার সাথে তিনিও পালিয়ে যান পাকিস্তানে। এরপর পাকিস্তান সেনা গোয়েন্দাদের আশ্রয়ের ভরসা থাকলেও আমেরিকানদের হাতে ধরা পড়া বা ড্রোন হামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে তাকে। আমেরিকানরা যে কয়জন তালেবান এবং আল-কায়েদা নেতাকে ধরার তালিকা করেছিল, সেই তালিকায় মোল্লা বারাদারের নামও ছিল।
পাকিস্তানে কেন কারাবাস করতে হয়েছিল বারাদারকে?
২০১০ সালে করাচিতে পাকিস্তানের পুলিশ মোল্লা বারাদারকে আটক করে। সে সময় পত্র-পত্রিকায় যে ছবি ছাপা হয়েছিল, তাতে দেখা যায় তাকে লোহার চেন দিয়ে হাত বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক গণমাধ্যমে তখন বিশ্লেষকরা লিখেছিলেন যে, আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার আশায় মোল্লা বারাদারকে ধরেছে পাকিস্তান। কারণ পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই তালেবান এবং আল-কায়েদাকে আশ্রয় দিচ্ছে এই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করেছিল। তখন এমন সব খবরও বের হয় যে, মোল্লা বারাদার আপোষ-মীমাংসার চেষ্টা হিসেবে কাবুলে সে সময়কার প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন, যা আইএসআই জেনে গিয়েছিল। কিন্তু তাকে আটক করলেও আমেরিকানদের হাতে তুলে দেয়নি পাকিস্তান।
করাচি থেকে দোহা
সন্ত্রাসের মামলায় আট বছর পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন মোল্লা বারাদার। ২০১৮ সালের অক্টোবরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তখন এমন খবর বেরিয়েছিল যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মুক্তি চেয়েছিলেন, কারণ আমেরিকা আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ করার জন্য তালেবানের সঙ্গে মীমাংসায় বসার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সে লক্ষ্যে ওই সংগঠনের একজন প্রভাবশালী নেতার খোঁজ করছিলেন। এই খবর সত্য প্রমাণিত হয় যখন মুক্তি পাওয়ার কিছুদিন পরই বারাদার দোহায় গিয়ে তালেবানের রাজনৈতিক অফিসের দায়িত্ব নেন। তবে আমেরিকানরা আপোষ-মীমাংসার জন্য তালেবানের পক্ষে তাকেই কেন বেছে নিয়েছিল তা খুব পরিষ্কার নয়। তবে সে সময় নিউইয়র্ক টাইমসে বারাদারের সাংগঠনিক দক্ষতা, স্বাধীনচেতা ব্যক্তিত্ব এবং তালেবানের তৃণমূলে তার প্রভাব নিয়ে একটি রিপোর্ট ছাপা হয়। ওই রিপোর্টে বলা হয়, ২০০৯ সালে বারাদার সাধারণ মানুষের মন জয় করার উপায় নিয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন, যেটি তৃণমূলে তালেবানের যোদ্ধাদের হাতে হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে তালেবানকে নিয়ে সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে সাংবাদিক জুলিয়ান বোর্গার লিখেছেন, পশ্চিমা কূটনীতিকরা দেখেছিলেন যে তালেবান শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বারাদারই পাকিস্তান সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর কথা সবসময় শুনতে চাইতেন না এবং তিনি অতীতে কাবুলের প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছেন। ২০১৯ সালে দোহায় গিয়ে তালেবানের পক্ষে আলোচনায় নেতৃত্ব নেন বারাদার। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারিতে আমেরিকার সাথে তালেবানের পক্ষে তিনিই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে তালেবানের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মোল্লা বারাদারকেই সারাবিশ্বের মানুষ দেখেছে। বারাদার তালেবানের এক নম্বর নেতা নন, কিন্তু বিশ্বের কাছে তিনিই এখন তালেবানের মুখ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছেন বলে মনে করেন ড. ইউসুফজাই। এছাড়া বারাদার ভালো ইংরেজি জানেন। বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন। বিদেশ সফরে গিয়ে তাদের ভরসা দিচ্ছেন, স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। তাছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ভালো আবার চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরি করেছেন। পাকিস্তান তাকে এক সময় আটক করে জেলে পুরলেও ২০২০ সালে আমেরিকার সাথে চুক্তি সই করার আগে বারাদার ইসলামাবাদ গিয়ে পাকিস্তানি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আসেন, যা নিয়ে তখন বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।
ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রশ্নে কতটা নমনীয় হবেন বারাদার?
আমেরিকার সাথে দোহায় যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে নানা পক্ষের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তালেবান। কাবুল দখলের পর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার চাপ তৈরি হয়েছে তাদের ওপর। এমনকি তালেবানের সবচেয়ে বড় সমর্থক পাকিস্তানও সতর্ক করছে যে তারাও কাবুলে বিভিন্ন আফগান পক্ষের সমন্বয়ে একটি সরকার দেখতে চায়। সোমবার আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু তাজিক, উজবেক এবং হাজারা সম্প্রদায়ের নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল ইসলামাবাদে গিয়ে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে কথা বলেছেন। আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিশেষ দূত মোহাম্মদ সাদিক সাংবাদিকদের বলেন, আগের বারের মতো (১৯৯৬ সাল) পাকিস্তান তালেবানকে একতরফা স্বীকৃতি দেবে না। রাশিয়াও বলছে যে, আফগানিস্তানের শাসক হিসেবে তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে তারা তাড়াহুড়ো করবে না। অর্থাৎ যেসব প্রতিবেশী দেশের স্বীকৃতি তালেবানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তারাও চাইছে তালেবানকে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে হবে। ড. ইউসুফজাই মনে করেন, কাবুলে যে সরকার হবে তা মূলত তালেবানের সরকারই হবে। তিনি বলেন, এই সরকারে থাকবে তালেবান এবং তাদের কড়া সমর্থকরা। তালেবানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না হলেও তাদের নীতি-আদর্শ যারা সমর্থন করে, বড়জোর তাদেরই সরকারে জায়গা হতে পারে। তালেবান সবসময় আনুগত্যকে পুরস্কৃত করে। যারা ২০ বছর ধরে তাদের হয়ে যুদ্ধ করেছে, কারাভোগ করেছে, তারাই প্রধান পদগুলো পাবেন বলে মনে করেন ড. ইউসুফজাই। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই অধ্যাপক আরও মনে করেন, তালেবানের বন্ধু প্রয়োজন কিন্তু বন্ধুত্বের জন্য বড় ধরণের কোনও আপোষ তারা করবে না। নারীদের শিক্ষা এবং কাজের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে না বলে তালেবানের পক্ষ থেকে ক্রমাগত আশ্বস্ত করা হচ্ছে। স্থানীয় টোলো টিভি চ্যানেলে মঙ্গলবার তালেবানের একজন নেতা একজন নারী উপস্থাপককে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন।