করোনায় জেনারেল হাসপাতালে এক দিনে মৃত্যু ১১ জনের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি দ্রুত টিকা গ্রহণের আহবান যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের ভয়াবহ থাবায় অসহায় হয়ে পড়ছে যশোরের মানুষ। জেলায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন নাম। আক্রান্ত রোগীর চাপে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। দ্রুত টিকা গ্রহণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার যশোর সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রেহেনেওয়াজ জানান, রবিবার সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে করোনা ও উপসর্গে আরও ১২ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১১ জন ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন একজন। অন্যজন জেলার কেশবপুর উপজেলায় নিজ বাড়িতে করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় মারা যান।
ডা. রেহনেওয়াজ আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে ৪৩১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৮ জন, জিন অ্যাক্সপার্ট মেশিনে ১২ জনের নমুনা পরীক্ষায় আটজন ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ৩৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ বলেন, ‘হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১০ জন এবং উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ১৩৭ জন। এর মধ্যে করোনার রেড জোনে ৯৮ জন এবং ইয়েলো জোনে ৩৯ জন রোগী রয়েছেন। তিনি বলেন, প্রতিদিনই করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। একসঙ্গে বেশি সংখ্যক রোগীকে সামাল দিতে গিয়ে চিকিৎসক-নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকতারুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত ও করোনা উপসর্গ নিয়ে যেসব রোগী ভর্তি আছেন তাদের চিকিৎসার বিষয়ে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক-নার্স নিয়োজিত রয়েছে। যেসব রোগীর অবস্থা একটু খারাপ তাদেরকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণত যেসব করোনা রোগী মারা যাচ্ছেন তারা আগে থেকেই খারাপ অবস্থা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন। এ অবস্থায় সকলকে করোনা উপসর্গকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে সচেতন হতে হবে বলে তিনি জানান।
সিভিল সার্জন সেখ মো.আবু শাহীন বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন স্বাস্থ্য সচেতনতার বিকল্প নেই। মানুষকে কঠোর লকডাউন চলাকালে কোনো কারণ ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। বাইরে আসলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। তিনি বলেন, এ পরিস্থিতি থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি যারা টিকা পাওয়ার উপযুক্ত তাদেরকে নিবন্ধনের আওতায় আসতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকা গ্রহন করতে হবে। এগুলো করলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে যশোরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এ পর্যন্ত জেলায় ১৭ হাজার ৯১৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৬৫২ জন। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩২২।