চার পেয়ে রোবটকে হাঁটতে শেখাচ্ছে ফেইসবুক

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ কুকুর সদৃশ চার পেয়ে এক রোবট হেঁটে চলেছে বালি, পাথর এবং অন্যান্য কঠিন পৃষ্ঠের উপর দিয়ে। কোনো সমস্যা হচ্ছে না হাঁটতে। উল্টো পৃষ্ঠ অনুসারে নিজের ভারসাম্য ঠিক করে নিচ্ছে। গোটা বিষয়টির পেছনে কাজ করছে ফেইসবুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষক দল।
এ কাজে কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সঙ্গে জোট বেঁধেছে গবেষক দলটি। এখনও কোনো নাম পায়নি রোবটটি। সেটিকেই কীভাবে হাঁটার সময় পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে তা শেখানো হচ্ছে। শুক্রবার এ ব্যাপারে জানিয়েছে গবেষক দলটি।
এক ভিডিওতে দেখা গেছে, পাথরের উপর দিয়ে, সিঁড়ি দিয়ে নিয়ে নামতে এবং নির্মাণাধীন এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় নিজের চলাচল পদ্ধতি ঠিক করে নিচ্ছে রোবটটি। এটি তৈরি করেছে চীনা স্টার্টআপ ইউনিট্রি।
সিনেটের প্রতিবেদন বলছে, গবেষকরা অভ্যন্তরীণ পরিবেশেও পরীক্ষা করে দেখেছেন রোবটটিকে। পিচ্ছিল পৃষ্ঠ তৈরি করতে প্লাস্টিকের আবরণের উপর তেল ঢেলে সেটির উপর দিয়ে রোবটটিকে হাঁটিয়েছেন গবেষকরা। প্রত্যেকবারই রোবটটি নিজ ভারসাম্য ঠিক করে নিয়েছে এবং সামনে এগিয়ে গেছে।
ইউসি বার্কলে অধ্যাপক এবং ফেইসবুকের এআই দলের গবেষক জিতেন্দ্র মালিক জানিয়েছেন, পরীক্ষা এবং ভুল প্রক্রিয়া ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে তথ্য সংগ্রহের মধ্য দিয়ে নিজ ভারসাম্য ঠিক করা শিখেছে রোবটটি। এর কোনো কম্পিউটার দৃষ্টি নেই। ফলে ভিন্ন ভিন্ন পৃষ্ঠে শারীরিক কাঠামো কীভাবে আচরণ করে থাকে, তা থেকে হাঁটতে শিখেছে এটি।
গোটা প্রক্রিয়াটির সঙ্গে মানুষের শেখার প্রক্রিয়ার মিল রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো পা ডুবে যাচ্ছে তা বুঝতে পারলে নিজ পদক্ষেপ ঠিক করে নেওয়া। মালিক বলছেন, “চ্যালেঞ্জ হল রোবোটিক্সের বেলায় বাস্তব বিশ্বের অনেক ভেরিয়েবল বা পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি থাকে।”
দুটি প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে গবেষকরা এআই নিয়ন্ত্রিত রোবটকে কম্পিউটার স্টিমুলেশনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বাস্তব বিশ্বে নামানোর আগে বিভিন্ন পৃষ্ঠ সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। গোটা বিষয়টিকে ‘র‌্যাপিড মোটর অ্যাডাপটেশন’ এর ক্ষেত্রে এআই মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করছেন গবেষকরা।
তারা উল্লেখ করেছেন, “প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ শিক্ষা নির্ভর প্রক্রিয়ায় একদম গোড়া থেকে বিশ্বের সঙ্গে অনুসন্ধান ও যোগাযোগের মাধ্যমে পা সম্পন্ন রোবটকে নিজ পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ানো হচ্ছে।”
ফেইসবুকের দাবি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই অর্জন অনুসন্ধান এবং উদ্ধার খাতে রোবটের কার্যকারিতা উন্নত করতে পারবে। এ ছাড়া বাসায়, যেখানে যন্ত্রকে সিঁড়ি ও অন্যান্য বস্তু এড়িয়ে চলাচল করতে হয়, সেখানেও এটি ভূমিকা রাখবে।
করোনাভাইরাস মহামারীর এ সময়ে এআই গবেষকদেরকে রোবটের পরীক্ষার ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে হয়েছে। কারণ গবেষণাগার বন্ধ ছিল। ইউসি বার্কলে’র স্নাতক শিক্ষার্থী আশিষ কুমার জানিয়েছেন, রোবটকে নিজ বাসায়, বে এরিয়ার পাহাড়ি পথে এবং নিকটবর্তী এক নির্মাণ সাইটে পরীক্ষা করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে কুমার বলেছেন, “যেটা মনে হয়েছে কাজে আসবে সেটাতেই করেছি।” পরীক্ষার সময় রোবট কয়েকবার নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বলেও জানান তিনি।