কুমড়ার শাকের কেজি ৯০ টাকা

0

মোংলা প্রতিনিধি॥ লকডাউনের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল পরিবহন স্বাভাবিক রয়েছে। এরপরও লকডাউনের অজুহাত দেখিয়ে মোংলা পৌর শহরের প্রধান কাঁচাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস চড়া দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে ৯০ টাকা কেজিতে কুমড়ার শাক বিক্রি করছেন তারা।
সোমবার (০৫ জুলাই) সকালে মোংলা পৌর শহরের কাঁচাবাজারে ৯০ টাকা কেজিতে কুমড়ার শাক বিক্রি করতে দেখা গেছে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাঁচাবাজারের প্রায় সব জিনিসের দাম বেশি। ৬০ টাকার নিচে কোনও সবজি নেই।বাজারে সবজি কিনতে আসা মো. সোহেল হোসেন বলেন, কুমড়ার শাকের কেজি ৯০ টাকা। এর আগে এই শাকের এমন দাম দেখিনি। যাবতীয় সব ধরনের শাকের আঁটি ২০-৩০ টাকায় পাওয়া যেতো। এখন কুমড়ার শাকের কেজি ৯০ টাকা, পুঁই শাকের আঁটি ৫০ টাকা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, পুঁই ও ডাঁটাশাকের আঁটি ৫০ টাকা, করলার কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়সের কেজি ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, বেগুন ৬৫ টাকা, পটল ৭০ টাকা, ঝিঙে আর চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, কাকরোল ৬৫ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, শসার কেজি ৬০ টাকা এবং আলুর কেজি ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, লকডাউনে যানবাহন চলাচল বন্ধ। তাই কাঁচাবাজারের জিনিসপত্রের দাম বেশি। বেশি দামে কিনে বেশি করতে হয় তাদের।
শাকের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে মোংলা পৌর শহরের কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মো. শাজাহান বলেন, আড়ত থেকে আমাদের বেশি দামে কেনা। সে অনুযায়ী বিক্রি করতে হয়। কুমড়ার শাকের কেজি ৯০ টাকা বিক্রি করলে সীমিত লাভ হয়।
অপর ব্যবসায়ী মো. বাদল মিয়া বলেন, আমরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াই না। লকডাউনের কারণে বাজারে শাকসবজির সরবরাহ কম। তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি।এ ব্যাপারে জানতে মোংলা পৌর শহরের কাঁচাবাজারের আড়ৎদার মো. ফিরোজকে একাধিকবার কল দিলেও ফোন ধরেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রাম থেকে অনেক কৃষক নিজেদের উৎপাদিত শাকসবজি বিক্রির জন্য শহরের প্রধান বাজারে আসেন। ক্ন্তিু তাদের বাজারে বসতে দেওয়া হয় না। বাজারের একটি সিন্ডিকেট কৃষকের কাছ থেকে কম দামে শাকসবজি কিনে চড়া দামে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেন। পাইকারা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। এতে বেড়ে যায় শাকসবজির দাম।এদিকে বাজারে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, চিনি, আটা, আদা, রসুন, এলাচ, শুকনা মরিচ, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের চড়া দামে বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ। বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা না থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
এ বিষয়ে বাজার মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, মোংলা বাজারের সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে বাজার মনিটরিং করা হবে।
উপজেলা বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য নুর আলম শেখ বলেন, বাজারে অনেক পুরোনো একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। করোনা ও লকডাউনের সুযোগে কৃষকদের কাঁচা মালামাল কিনে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে তারা। তবে ৯০ টাকা কেজিতে শাক বিক্রির বিষয়টি মানা যায় না। প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। একই সঙ্গে প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করা।