সাত বছরের সর্বনিম্নে নামবে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক মজুদ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক মজুদ আবারো সংকটের মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আগামী মৌসুমে খাদ্যশস্যের ব্যবহার চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়বে সরবরাহ। ফলে ২০২১-২২ মৌসুমে খাদ্যশস্যের মজুদ কমে সাত বছরের সর্বনিম্নে নামবে। ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি) কর্তৃক বৈশ্বিক খাদ্যশস্যের বাজার নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়। এ নিয়ে টানা পাঁচ বছরের মতো মজুদে নিম্নমুখী ভাব লক্ষ করা গেছে। খবর ওয়াল্ডগ্রেইনডটকম।
আইজিসির পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক ব্যবহার ৫ কোটি ৯০ লাখ টন বেড়ে ২২৯ কোটি ৭০ লাখ টনে দাঁড়াবে। এতে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করবে বিশ্বজুড়ে গম ও ভুট্টার ক্রমবর্ধমান ব্যবহার। আগামী মৌসুমে খাদ্যশস্যের মাসভিত্তিক মজুদ ১ কোটি ৫০ লাখ টন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে আইজিসি। মৌসুমে শেষে মজুদের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫৯ কোটি ৫০ লাখ টনে, যা গত সাত বছরের সর্বনিম্ন।
মে মাসের শুরুতে চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক মজুদ নিয়ে প্রাক্কলন করে আইজিসি। এ সময় মজুদের পরিমাণ কমে ৬০ কোটি ৯০ লাখ টনে নেমে আসার পূর্বাভাস দেয় লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি।
২০২১-২২ মৌসুমে বৈশ্বিক খাদ্যশস্য উৎপাদন ৭ কোটি ২০ লাখ টন বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় বিশ্বজুড়ে ২২৯ কোটি ২০ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করা হবে। চলতি মৌসুমে ২২০ কোটি টন উৎপাদনের প্রাক্কলন করে আইজিসি। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, উৎপাদনে বড় আকারের প্রবৃদ্ধি আসায় আগামী মৌসুমের শুরুতে মজুদ কিছুটা স্বাভাবিক থাকবে। তবে ব্যবহার ও সরবরাহ চাঙ্গা হতে থাকায় মৌসুমের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক মজুদ কমে সাত বছরের সর্বনিম্নে নেমে আসবে। মজুদে ঘাটতি দেখা দেয়ার পেছনে চীনের খাদ্যশস্য আমদানি বৃদ্ধিকেও দায়ী করছে আইজিসি। ২০২০-২১ মৌসুমে দেশটি খাদ্যশস্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হবে না। ফলে দেশীয় চাহিদা পূরণে আমদানির পরিমাণ বাড়াবে চীন।
আইজিসির দেয়া তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে বৈশ্বিক খাদ্যশস্যের বাণিজ্য তিন বছরের মধ্যে প্রথম কমে ৪১ কোটি ৫০ লাখ টনে দাঁড়াতে পারে। তবে আগামী মৌসুমে বাণিজ্য বাড়বে। এ সময় সব মিলিয়ে ৪২ কোটি টন খাদ্যশস্য আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন করা হবে।
চলতি মৌসুমের জন্য করা প্রাক্কলনের তথ্য বলছে, চলতি মৌসুমে মোট বৈশ্বিক খাদ্যশস্য উৎপাদন কমে ২২০ কোটি টনে নেমে আসবে। মূলত ব্রাজিলে ভুট্টা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বড় আকারে হ্রাস পাওয়ায় মোট উৎপাদনের ওপর প্রভাব পড়বে। তবে ২০১৯-২০ মৌসুমের তুলনায় দেশটির ভুট্টা উৎপাদন ৩ কোটি ৫০ লাখ টন বাড়তে পারে।
আইজিসি বলছে, চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্যের ব্যবহার যে হারে বেড়েছে তার চেয়ে বেশি পরিমাণে সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। ফলে চলতি মৌসুমেও টানা চতুর্থ বছরের মতো মজুদ কমবে।
২০২০-২১ মৌসুমে বৈশ্বিক সয়াবিন উৎপাদন এর আগের মৌসুমের তুলনায় ৭ শতাংশ বেড়ে ৩৬ কোটি ১০ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ ব্যবহার সত্ত্বেও পণ্যটির মজুদ দ্বিতীয় বছরের মতো বাড়বে বলে মনে করছে আইজিসি। এদিকে খাদ্যশস্যের উচ্চমূল্য কৃষকদের আবাদ বাড়াতে উৎসাহিত করছে। ফলে ২০২১-২২ মৌসুমে প্রাক্কলিত উৎপাদনের পরিমাণ আরো ৬ শতাংশ বাড়তে পারে।