করোনাকালে অনাড়ম্বর পরিবেশে আরেকটি বাজেট

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছরের মতো এবারও অনাড়ম্বর পরিবেশে জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমনকি এবার সব সংসদ সদস্যও (এমপি) সংসদে যেতে পারেননি। অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ১৭০ জনের মত এমপি। মহামারির সংক্রমণ এড়াতেই এই ব্যবস্থা। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) সব মন্ত্রী-এমপিদের কঠোর স্বাস্থ্য বিধি মেনে সংসদে প্রবেশ করতে হয়েছে। দেখাতে হয়েছে করোনা ‘নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট। করোনার আগের প্রতি বছর বাজেট উত্থাপনের সময়ে যেমন জাঁকজমকপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল দুই বছর ধরে তা নেই। করোনার কারণে দাওয়াত দেয়া হয়নি কূটনীতিকদের। ছিলেন না রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও। তবে বরাবরের মতো রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংসদে উপস্থিত থেকে বাজেট পেশ প্রত্যক্ষ করেন। এদিন সংসদ ভবন এলাকার চিত্র ছিলো ভিন্ন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রবেশে ছিলো কড়াকড়ি। ফলে অধিবেশনে চিরচেনা উৎসবের আমেজ দেখা যায়নি। এমপি-মন্ত্রীসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগেই করোনা টেস্ট করতে হয়েছে। সম্প্রতি দেশে করোনার ভারতীয় ধরন দেখা দেয়ায় তিন দিন পর পর করোনার পরীক্ষা করাতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবার একঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বাজেট উপস্থাপন করলেও নিজে পাঠ করেছেন সব মিলিয়ে ১৫ মিনিটের মতো। বাকি সময় তিনি পাওয়ার পয়েন্ট এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল পদ্ধতিতে বাজেট উপস্থাপন করেন। অর্থমন্ত্রীর অনুরোধে তার ১৯২ পৃষ্ঠার বাজেট বক্তব্য পঠিত বলে সংসদে গ্রহণ করা হয়।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। তবে অনুপস্থিত ছিলেন বিরোধীদলীয় রওশন এরশাদ। আগে থেকেই জ্যেষ্ঠ এমপিদের অধিবেশনে যাওয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। তবুও বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য অধিবেশনে ছিলেন। এবার প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের বাজেট বিগত অর্থবছরের তুলনায় ৩৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। বাজেটের এই অর্থ জোগান দিতে রাজস্ব, অভ্যন্তরীণ ঋণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণের শরণাপন্ন হবে সরকার। এবার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা, যা বিগত (২০২০-২১) অর্থবছরের চেয়ে ১১ হাজার কোটি টাকা বেশি। মোট আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত কর থেকে আসবে ১৬ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (এনইসি) অনুমোদন হয়েছে এডিপি।