বার বার ভূমিকম্পে পাল্টে যায় সিলেটের মানচিত্র

    0

    লোকসমাজ ডেস্ক॥সিলেটের জাফলং থেকে ছবিটি তুলেছেন আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পের জন্য বেশ ঝুঁকিতে আছে। আজ দুপুর পর্যন্ত অন্তত পাঁচবার কেঁপেছে সিলেট। অতীতেও এই অঞ্চলে বেশ কয়েকবার বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে। এমনকি প্রবল ভূমিকম্পে সিলেট এলাকায় ব্যাপক ভূ-পরিবর্তন ঘটে। অনেকখানি পাল্টে যায় সিলেটের মানচিত্র।সিলেট অঞ্চলে অতীতে অনেকবার বেশ বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার ইতিহাস আছে। এর মধ্যে একটি হয়েছিল ১৮৯৭ সালের ১২ জুন বিকেলে। এই ভয়াবহ ভূমিকম্পটি ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থ কোয়াক’ নামে পরিচিত। ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮.৭!
    এছাড়া ১৮৬৯ সালে সিলেট অঞ্চলের কাছার এলাকায় বেশ ভালোভাবে কেঁপে ওঠে সিলেট। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬। আরেকটি ১৯১৮ সালে শ্রীমঙ্গলে। আরেকটি ১৯২৩ সালে দুর্গাপুরে। এগুলোর মাত্রাও ছিল ৬ থেকে ৭ এর মধ্যে।
    বড় ধরনের এসব ভূমিকম্পে সিলেটে অনেক ফাটলের সৃষ্টি হয়, যা এখনো রয়েছে। শুধু তাই নয়, এর ফলে সিলেটজুড়ে সৃষ্টি হয় বিশালাকারের হাওর, বিল, জলাশয়ের। তবে ওই ফাটলগুলো বর্তমানে সুপ্ত অবস্থায় আছে। ছোট ছোট ভূমিকম্প হওয়ায় সেটি নাড়াচাড়া দিতে পারে। ছোট ছোট ভূমিকম্পের কারণে বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে।
    ইতিহাস বলছে, ১৫৪৮ সালে প্রচন্ড ভূমিকম্পে সিলেট এলাকায় ব্যাপক ভূ-পরিবর্তন ঘটে। উঁচু-নিচু ভূমি সমতলে পরিণত হয়। এরপর ১৬৪২, ১৬৬৩, ১৮১২ ও ১৮৬৯ সালের ভূমিকম্পে সিলেটের মানচিত্র অনেকটাই পাল্টে যায়।
    বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডাউকি ফল্টে রিখটার স্কেলে ৬ থেকে ৭ মাত্রার ভূকম্প হলেই সিলেটে পরিণতি হবে ভয়াবহ। আর ভূমিকম্পের মাত্রা যদি হয় ৮, তবে জনশূন্য বিরাণ ভূমিতে পরিণত হবে সিলেট। ক্ষতি হবে হাজার হাজার কোটি টাকার।
    ভূমিকম্পের প্রবণতা নিয়ে ২০০৩ সাল থেকে গবেষণা করছেন অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুটি অঞ্চলে (সিলেট অন্যতম) যেভাবে শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে বহুকাল ধরে তাতে আট মাত্রার পর্যন্ত ভূমিকম্প হতে পারে যদি একবারে হয়। হলে একবারেও হতে পারে আবার ভেঙ্গে ভেঙ্গে বা দফায় দফায়ও হতে পারে। কিন্তু কোন মাত্রার হবে এটা আগে থেকে অনুধাবন সম্ভব না।
    ভূ-প্রাকৃতিক গঠনের কারণে ভূমিকম্পের ডেঞ্জার জোনে রয়েছে সিলেট। এ জেলা থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী ডাউকি ফল্টের (ফল্ট হচ্ছে ভূগর্ভস্থ প্লেটের ফাঁক) অবস্থান। অন্যদিকে শাহবাজপুর ফল্টও (হবিগঞ্জ-কুমিল্লা এলাকাধীন) সিলেটের কাছাকাছি। যে কারণে সিলেটের জন্য ভূমিকম্পের ঝুঁকি খুবই বেশি।