ভবদহ অঞ্চলে পানি নিষ্কাশনের পর চার হাজারহেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান দুই একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। তিনি বলেন, বিএডিসি সেচের সহযোগিতায় তার মতো ইউনিয়নের অন্তত ৮শ কৃষক এবার বোরো ধান উৎপাদন করতে পেরেছেন। এর আগে জলাবদ্ধতার কারণে কেউ ফসল আবাদ করতে পারতেন না। শুধু কামরুজ্জামান নয়, যশোরের দুঃখ ভবদহ অঞ্চলে এবার চার হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছে। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বিএডিসি (সেচবিভাগ) যশোর ৫৭টি ক্ষমতা সম্পন্নসহ ১৭০টি সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন করে এলাকার বিলকেদারিয়া, বিলকাপালিয়া, মানুষ মরারবিল, আড়পাতাবিল, বিলখুকশিয়া এলাকায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে ফসল ফলানো সম্ভব হয়েছে। বিএডিসি (সেচ) যশোরের সহকারী প্রকৌশলী সোহেল রানা জানান, জলাবদ্ধ এলাকায় প্রত্যক্ষভাবে ২৭টি বিল এবং পরোক্ষভাবে আরও ২৬টি বিলের পানির নিষ্কাশন ব্যাবস্থা ব্যাহত হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এর ফলে ভবদহ এলাকার ২৩টি ইউনিয়নের ২১৮টি গ্রাম এবং ৩৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ। জলাবদ্ধ এলাকায় অধিকাংশ স্থানে কোন ফসল উৎপাদন হয়নি, মানুষের বাড়ি-ঘর, স্কুল-কলেজ, মসজিদ প্রায় সারা বছরই পানিতে জমা থাকত। ফলে চাষাবাদ ও মৎসচাষ কোনটাই সম্ভব হয়ে ওঠে না। মানুষের অসহায় অবস্থায় জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বিএডিসি (সেচ) যশোরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল রশিদ জানান, আগামী বছরে আরও বৃহৎ আকারে কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত ৭ হাজার হেক্টর জমি চাষের আওতায় এনে ফসল ফলানো সম্ভব হবে এবং এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নসহ আর্থিক সক্ষমতাবৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি। বিল কপালিয়ার কৃষক আফজাল হোসের জানান, আমাদের এলাকায় সারাবছরই পানিতে ডোবা থাকত। কেউ ফসল আবাদ করতে পারতেন না। বিএডিসির সহযোগিতায় এবার আমরা বোরো ধান উৎপাদন করতে পেরেছি। আমাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।