কপিলমুনিতে শঙ্কিত আম চাষিরা বৈরী আবহাওয়া অনাবৃষ্টিতে হতাশ দাবদাহে ঝরে পড়ছে গুটি

0

এইচ,এম,শফিউল ইসলাম,কপিলমুনি (খুলনা) ॥ কপিলমুনি এলাকায় আমের গুটি বেশি হলেও শঙ্কিত আম চাষিরা। অনাবৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া আর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আশা-নিরাশার দোলাচলে দুলছে আম চাষির স্বপ্ন। অনাবৃষ্টি আর প্রখর তাপে আমের গুটি ঝরে পড়ছে একই কারণে এবার আমের সাইজ ছোট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তার সাথে কিছু কিছু আমের গুটি ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চাষিরা গাছে স্প্রে করে ঔষধ দেওয়ার পরও গুটি ঝরা ও ফাটা বন্ধ হচ্ছে না। তারপরও করোনার প্রভাবে আমের বাজার পাবে কি না তা নিয়ে চাষিরা হতাশায় ভুগছেন।
কপিলমুনিতে আম গাছের ডগায় ডগায় দোল খাচ্ছে আমের গুটি। দিন দিন বড় হচ্ছে আমের গুটি। নানা জাতের আম, স্বাদ চাষির মনে রঙ ধরিয়েছে। বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তবে মনে রয়েছে শঙ্কা। অনাবৃষ্টি, করোনা প্রাদুর্ভাবও বছরের শুরু থেকেই লেগেই আছে। বৈশাখের তাণ্ডব, বৃষ্টি, ঝূর্ণিঝড় ও শিলা বৃষ্টি আমের শত্রু কিন্তু এবার বৈশাখী ঝড়, শিলা বৃষ্টি না থাকলেও রয়েছে খরা আর শুষ্কতা। ফলে ঝরে পরা, সাইজ ছোট হওয়ার বিষয় থাকায় সকাল বিকাল গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া আর ¯েপ্র করাসহ নানা পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন স্থানীয় আম চাষি। তাই আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানাগেছে, উপজেলায় ৫৮৫ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়ানো ছিটানো আম গাছ রয়েছে। এলাকায় স্থানীয় জাতের পাশাপাশি আম্রপালি, হিমসাগর, গোপালভোগ, বোম্বাই লতা, মল্লিকা, ল্যাংড়া, ফজলিসহ বিভিন্ন জাতের আম বাগানের সংখ্যা বেশি। তবে এ এলাকার গদাইপুরের বোম্বাই লতার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। আমের মুকুল থেকে যে পরিমাণ গুটি ধরেছে তাতে প্রচুর ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অনাবৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
গদাইপুর গ্রামের আম চাষি মোবারক ঢালী জানান, গাছে মুকুল আসার আগে বাগান পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল আসার পরে ও আগে দু’দফাসহ ছয় বার ছত্রাক নাশক স্প্রে করেছেন। কপিলমুনির কবির আহম্মেদ জানান, অন্যবারের তুলনায় আম বেশি হয়েছে কিন্তু আম কেনার খরিদদার কম, অন্যবার বাগান কেনার জন্যে বহু খরিদ্দার আগে থেকেই যোগাযোগ করে কিন্তু এবার তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে এ বছরও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বিধায় বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে বাগান পরিচর্যা করায় অতিরিক্ত অর্থ খরচও বেশি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ বছর আম গাছে প্রচুর পরিমাণ গুটি ধরেছে কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় আম ছোট। প্রকৃতিক বিপর্যায়ের উপর কারও কোন হাত থাকে না। অনাবৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় আমের গুটি ঝরে পড়ছে ও ফেটে যাচ্ছে। এ জন্য আমচাষিদের সকালে ও বিকেলে গাছের গোড়ায় পানি ঢালতে ও গাছে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এ বছর কপিলমুনি-পাইকগাছা এলাকার আম বাগান থেকে ৭ হাজার ২০ মেট্রিক টন আমের ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা প্রভাবে আমের বাজারে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না বলেও তিনি জানান। তবে বড় ধরণের কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে পাইকগাছার আম চাষিরা ভালো ফলন পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।