মনিরামপুরে খাদ্যের সংকটে কালোমুখো হনুমানের পাল

0

মজনুর রহমান, মনিরামপুর (যশোর) ॥ খাদ্যের সন্ধানে কালোমুখো হনুমানের পাল এবার যশোরের মনিরামপুর পৌর শহরের তাহেরপুর, মোহনপুর, বিজয়রামপুর, হাকোবা, গাংড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসাবাড়িতে হানা দিচ্ছে। বিশেষ করে বসতবাড়ির ছাদে (ছাদকৃষি) উৎপাদিত সবজি ও ফলদ গাছে হানা দিয়ে ক্ষতি করছে এই হনুমানের দল। এছাড়া খাবার না পেয়ে বাড়ির আসবাবপত্র তছনছসহ রান্না করা খাবারও নিয়ে যাচ্ছে। তবে গৃহবধূদের কেউ কেউ হনুমানদের খাবারও দিচ্ছেন।
কেশবপুর পৌর শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হরিহর নদীর তীরে হনুমানের অভয়ারণ্য গড়ে ওঠে প্রায় দেড়যুগ আগে। সরকার এ অভয়ারণ্যে হনুমানের জন্য খাদ্যও বরাদ্দ করে। তবে অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টরা প্রতিদিন যে খাদ্য সরবরাহ করেন প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। ফলে খাদ্যের সন্ধানে হনুমানের দল আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে হানা দিচ্ছে। কেশবপুরের পার্শ্ববর্তী মনিরামপুর উপজেলার মুজগন্নি, দুর্গাপুর, সৈয়দ মাহমুদপুর, নাগোরঘোপ, বাটবিলা, জামলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মিষ্টি কুমড়া, পেয়ারা, লেবু, বেগুন, পটল, পেঁপে, কলাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে হনুমানের দল হানা দিয়ে ক্ষতি করছে। মুজগন্নি গ্রামের কৃষক আবদুল করিম বলেন, হনুমানের দল প্রতিনিয়ত ফসলের জমিতে হানা দিচ্ছে। অপর কৃষক আব্দুর আবদুর রহিম জানান, শুধু সবজি বা গাছের ফল নয়, ঘরে ঢুকে রান্না করা হাড়িভর্তি খাবার নিয়ে যাচ্ছে ক্ষুধার্ত হনুমানের পাল।
এদিকে মুজগন্নি, দুর্গাপুর, সৈয়দ মাহমুদপুর, গোবিন্দপুর, বাটবিলা, বাঙালীপুর, নাগোরঘোপ, ফকিররাস্তা পেরিয়ে হনুমানের পাল এখন পৌরশহরে অবস্থান করছে। পৌরশহরের তাহেরপুর মাস্টারপাড়ার কলেজছাত্রী আমেনা খাতুন জানান, প্রতিদিন সকালের দিকে হনুমানের পাল বাড়ির আঙিনায় অবস্থান করছে। এছাড়া বাড়ির মধ্যে ঢুকে হাতে খাদ্য খাবার দেখলে কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। গৃহবধূ রজনী খাতুন জানান, হনুমানের পাল প্রায়ই রান্নাঘরে ঢুকে খাবার খেয়ে ফেলছে। স্কুলশিক্ষক ইসাহাক আলী ও আবুল হক জানান, হনুমানের দল তাদের ছাদে (ছাদকৃষি) হানা দিয়ে বিভিন্ন সবজি ও ফলদ গাছ সাবাড় করছে। অবশ্য হাকোবা এলাকার অশীতিপর শংকরী রানী কুন্ডু জানান, তারা খুশি হয়ে মাঝে মধ্যে খাদ্যখাবার দিয়ে থাকেন হনুমানের পালকে।
এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলায় কর্মরত বন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) গোলাম মোস্তফা জানান, অভয়ারণ্যে বর্তমান হনুমানের সংখ্যা রয়েছে সাড়ে ৬ শতাধিক। সরকারিভাবে এদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে প্রতিদিন ৩৬ কেজি পাকা কলা, ৫ কেজি বাদাম ও ৪ কেজি পাউরুটি। যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। ফলে খাদ্যের অভাবে হনুমানের দল বিভিন্ন লোকালয়ে হানা দিচ্ছে।