২০২৫ নাগাদ ৫৫৯ কোটি ডলারে পৌঁছবে তুলার বৈশ্বিক বাজার

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥করোনা মহামারীতে বৈশ্বিক বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তুলা উৎপাদনে নতুন করে আশা দেখছে বিশ্ব। বছরান্তে তুলা শিল্পের বাজার আরো বড় হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি ২০২৫ সাল নাগাদ বৈশ্বিক তুলার বাজার ৫৫৯ কোটি ডলারে পৌঁছবে বলেও প্রত্যাশা তাদের।
বৈশ্বিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান টেকনাভিওর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। কভিড-১৯-এর প্রভাব, নতুন সম্ভবনা এবং বৈশ্বিক তুলার বাজারের নানা চ্যালেঞ্জ ও এর প্রতিকারের রূপরেখা উঠে আসে প্রতিবেদনে। ২০২১-২৫ সালের মধ্যে তুলা উৎপাদনের বার্ষিক সমন্বিত বৃদ্ধির হার (সিএজিআর) প্রায় ২.৯২ শতাংশে পৌঁছবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন এ শিল্পের বাজার বিশ্লেষকরা।
মূলত দৈনন্দিন প্রয়োজনে তুলার বাজারের ওপর বিশ্বকে অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়। তৈরি পোশাক থেকে শুরু করে অনেক প্রয়োজনীয় কাজে তুলার ব্যবহার সর্বজনবিদিত। তাই এর উপযোগিতা অনুভব করে এ শিল্পের প্রতি নজর দিচ্ছে বিশ্বের দেশগুলো।
এদিকে প্রতিবেদন বলছে, তুলার বাজারের সমৃদ্ধিতে সরকারি উদ্যোগ ও এর সমর্থন একে আরো প্রসারিত করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে অতিরিক্ত পানির ব্যবহার ও পানিদূষণ তুলার বাজারের অগ্রগতিকে ব্যাহত করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা। অন্যদিকে তুলার বহুমুখী ব্যবহারের কারণে আগামী বছরগুলোতে এ শিল্পের একটি উজ্জ্বল সমৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছেন বলেও দাবি বাজার বিশ্লেষকদের।
এরই মধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সরকারগুলো তুলা শিল্পের সমৃদ্ধিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে তুলা চাষে সরকারি ঋণ ও প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সুযোগ দিচ্ছে সরকারগুলো। উদাহরণস্বরূপ তুলা রফতানি বৃদ্ধিতে কিছু কৌশলগত নীতিনির্ধারণ করেছে ভারত সরকার। দেশটির ডিফেন্স রিসোর্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজশনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে সুতা উৎপাদনে সহযোগিতার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সামরিক পোশাক আমদানিতে চীনসহ অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভরতা থেকে সরে এসেছে।
এসব কারণ ছাড়াও উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশকে পণ্যটি রফতানির ওপর নির্ভর করতে হয়। মূল্য শৃঙ্খলা ও রফতানিকে বৈচিত্র্যময় করতে দেশগুলোকে আঙ্কটাডের কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করতে হয়। এ কারণগুলো সুতার বাজারের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে, যার ওপর ভিত্তি করেই ওই সময়ের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনের পূর্বাভাস দিয়েছে টেকনাভিও।
টেকনাভিওর একজন জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষকের মতে, বিশ্বের মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের অনেকগুলোকেই তুলা কিংবা তুলাজাত দ্রব্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে তুলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মূলত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও জীবিকার উৎস হিসেবে তুলার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের ফলেই পূর্বাভাস দেয়া সময়ের মধ্যে তুলার বাজার আরো সমৃদ্ধ হবে।
এদিকে ২০২৫ সালের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্র অর্জন করতে টেকনাভিওর পক্ষ থেকে প্রতিবেদনে বেশকিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০২০ সালের অফলাইন বিভাজনের ভিত্তিতে নির্ধারিত বণ্টন চ্যানেলের মাধ্যমে তুলা আমদানি-রফতানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এশিয়া-প্যাসিফিক প্রভাবক অঞ্চলের বাজারগুলোকে এ শিল্পের সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে তুলার বাজারের অন্তত ৮৫ শতাংশ উৎপাদন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল হতে থাকতে হবে।
টেকনাভিওর প্রতিবেদনের পরামর্শে আরো বলা হয়, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে তুলার মূল দুটি বাজার হলো চীন ও ভারত। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে এ অঞ্চলের বাজারের উৎপাদন উত্তর আমেরিকার চেয়েও কিছুটা মন্থর হতে হবে।