বিনিয়োগের জন্য বাধা অধিক কর

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥অধিক করকেই দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের জন্য অন্যতম বাধা বলে মনে করছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষসহ সরকারের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষগুলো। পাশাপাশি লোকসানি হলেও সর্বনিম্ন করসহ কর কাঠামোর জটিলতাকে দুষছেন তারা। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটকে করোনার পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাজেট উল্লেখ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বিনিয়োগকারীদের জন্য আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে বেশকিছু সংস্কার প্রস্তাবও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে গতকাল আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিডা ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) পাশাপাশি বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টে (বিল্ড) প্রতিনিধিরা এসব প্রস্তাব দেন।
বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে করপোরেট করহার কমানোর কথা উল্লেখ করে বিডার নির্বাহী সদস্য মহসিনা ইয়াসমিন বলেন, বাংলাদেশে করপোরেট করহার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। যে কারণে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়েও বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রতি আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না।
করছাড়ের কারণে রাজস্ব যেন না কমে, সেজন্য একটি রিসার্চ টিম গঠন করার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, এনবিআরের সহায়তায় আমরা একটি রিসার্চ টিম গঠন করতে চাই। কোন খাতে করহার ছাড় দেয়া জরুরি, টিম সে বিষযে কাজ করবে। আবার কোনো ছাড় না দিলেও বিনিয়োগ পাওয়া যাবে, তার তালিকাও করবে এ টিম।
প্রতি বছর ২ শতাংশ হারে করপোরেট করহার কমানোর প্রস্তাবের পাশাপাশি কোম্পানির জন্য সর্বনিম্ন কর প্রদানের আইন বাতিলের প্রস্তাব করে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। বেপজার নির্বাহী পরিচালক আব্দুল আজিজ বলেন, কোনো কোম্পানি লোকসান করলেও তাকে মিনিমাম কর দিতে হয়। এতে লোকসানি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় টিকে থাকা কষ্ট হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় এটি প্রত্যাহার হওয়া উচিত।
অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য ও সেবার ওপর কর অবকাশ সুবিধা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম ভ্যাট ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয় বেজা।
কভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বেশকিছু কার্যকরী সুপারিশ তুলে ধরেছে বিল্ড। কর আহরণ প্রক্রিয়াকে সহজতর করে করের আওতা বাড়ানো, করপোরেট কর কমানো, চাহিদা ও যোগানের পার্থক্য কমিয়ে আনার সুপারিশ করেন বিল্ড চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান।
শুধু করছাড়ের চিন্তা না করে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ে সহায়তা হয় এমন কমিটি গঠনের প্রস্তাবে সমর্থন করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমও। তিনি বলেন, অটোমেশনের কারণে করফাঁকি কমে গেলে তখন এনবিআর ছাড় দিতে পারবে। এজন্য ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।