সড়কে জরিমানা আদায়ে এখনও চালু হয়নি পজ মেশিন

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় ট্রাফিক ই-প্রসিকিউশনের জরিমানার টাকা ক্রেডিট-ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে আদায় শুরু হয়েছে প্রায় দেড় বছর আগে। কথা ছিল ট্রাফিক সার্জেন্টদের কাছে জরিমানা আদায়ে থাকবে পজ (পয়েন্ট অফ সেল) মেশিন। কিন্তু এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি কার্ডের মাধ্যমে মামলার টাকা আদায়। ট্রাফিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দু-এক মাসের মধ্যেই পজ মেশিনগুলো সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এ কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে জরিমানার টাকা দ্রুত পরিশোধ করে মামলার নিষ্পত্তি করা যাবে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা ছাড়াই।
এখনও চালকের বিরুদ্ধে মামলা করলে দেখা যায় আগের মতো স্লিপ দিয়ে নির্ধারিত তারিখে ট্রাফিক বিভাগের অফিসে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে জব্দ করা কাগজ নিয়ে আসতে হয়। এতে চালকদের বাড়তি কিছু ঝক্কি পোহাতে হয়। অন্যদিকে শুধু মোবাইল ব্যাংকিং ইউক্যাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাচ্ছে জরিমানার টাকা। সব ধরনের কার্ড চালু হলে সরকারি কর্মকর্তা ও চালক, দুই পক্ষেরই সময় বাঁচবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের তথ্যে জানা গেছে, ২০২০ সালে ৮টি ট্রাফিক বিভাগের সড়কে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৪টি মামলা হয়। জরিমানা আদায় হয় সাড়ে ২৪ কোটি টাকারও বেশি। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসেই মামলা হয় ২৫ হাজার ১৬১টি। জরিমানা আদায় হয় ৩ কোটি টাকার বেশি। কর্মকর্তাদের দাবি, সড়কে দায়ের করা মামলার টাকা সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা হয়। এখানে পুলিশের কোনও ইনসেনটিভ কিংবা পারফরম্যান্স বোনাসের ব্যবস্থা নেই। পজ মেশিন চালু হলে এ প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আসবে। ট্রাফিক বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, জনগণ আইন ও জরিমানার বিষয়ে জানলেও তা মানার ব্যাপারে বেশ উদাসীন। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ও দুর্ঘটনা কমাতে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। যত্রতত্র রাস্তা পারাপার, ওভারটেকিং, যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানো-নামানো এসব বিষয়ে কঠোর না হলে কিছুতেই সড়ক নিরাপদ হবে না।
কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাফিক বিভাগ কোনও মামলা করলে সংশ্লিষ্ট গাড়ির কাগজপত্র, ইনসুরেন্স, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও রুট পারমিট জব্দ করা হয়। মামলার নিষ্পত্তিতে নির্ধারিত ডিভিশনের ট্রাফিক বিভাগে উপস্থিত হয়ে টাকা জমা দিয়ে কাগজ নিয়ে আসতে হয়। এই প্রক্রিয়া এড়ানোর সুযোগ নেই। এ নিয়ে একটি সেন্ট্রাল ডাটাবেজ করা আছে। প্রতিনিয়ত সেখানে তথ্য জমা হয়। নতুন সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ট্রাফিক বিভাগের সফটওয়্যার প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। একটি মামলার ক্ষেত্রে ট্রাফিক বিভাগের বিভিন্ন ধরনের অবজারভেশন থাকে। সেসব বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে থাকে মাঠ কর্মকর্তারা। তিনি আরও জানান, কার্ডের মাধ্যমে মামলার টাকা পরিশোধ করা গেলেও অনেক ক্ষেত্রে জব্দ করা কাগজ নির্ধারিত ট্রাফিক পুলিশ অফিস থেকেই সংগ্রহ করতে হয়। কিছু অপরাধ যেমন হাইড্রোলিক হর্ন, উল্টোপথে গাড়ি চালানো, রং পার্কিং এসব ক্ষেত্রে কার্ডের মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে তাৎক্ষণিক কাগজপত্র পাওয়া সম্ভব। তবে মামলার গুরুত্বের ওপর নির্ভর করে পজ মেশিনে জরিমানা আদায় করা হয়। অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকে সার্জেন্টের কাছে পজ মেশিন সরবরাহ করা হবে।