সাড়ে ২০ বছর পর বাহাদুরপুরের শাহাদৎ হত্যা মামলার রায়ে এক আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রায় সাড়ে ২০ বছর আগে যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে জমিজমা নিয়ে বিরোধে খুন হয়েছিলেন শাহাদৎ হোসেন নামে এক ব্যক্তি। গতকাল বুধবার সেই হত্যা মামলার রায়ে হারুনর রশিদ নামে এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান করেছেন আদালত। একই সাথে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদ- প্রদান করা হয়। এছাড়া এই মামলার অপর আসামি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। যশোরের বিশেষ দায়রা জজ ও স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক এই রায় প্রদান করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা। যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত আসামি হারুনর রশিদ বাহাদুরপুর গ্রামের আব্দুল ওহাব মোল্যার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। অপরদিকে খালাস পাওয়া আসামি জাকির হোসেন সদর উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে শাহাদৎ হোসেন ২০০০ সালের ২৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে স্থানীয় হাইস্কুলের (বাহাদুরপুর হাইস্কুল) সামনের দোকান থেকে চা পান শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে একই গ্রামের নাজির মতিউর রহমানের বাড়ির সামনে পৌঁছালে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা তার ওপর চড়াও হয় এবং কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে কুপিয়ে জখম করে। আহত শাহাদৎ হোসেন ওই অবস্থায় দৌঁড়ে নাজির মতিউর রহমানের বাড়ির উঠানে গিয়ে সেখানে পড়ে যান। তার গলা কাটা থাকায় তিনি এ সময় কোনোকিছু বলার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে মতিউর রহমানের চিৎকারে শাহাদৎ হোসেনের চাচতোভাই শাজাহান আলীসহ অন্যান্য লোকজন ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহাদৎ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করে। হত্যার ঘটনায় পরদিন ৩০ আগস্ট নিহতের ভগ্নিপতি নতুন উপশহরের ই-ব্লকের বাসিন্দা ফজলুর রহমান অজ্ঞাতানামাদের আসামি করে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ এই মামলার তদন্তকালে হত্যাকা-ে জড়িত সন্দেহে হারুনর রশিদ ও জাকির হোসেনকে আটক করে। এর মধ্যে হারুনর রশিদ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পুলিশ তদন্তকালে এও জানতে পারে যে, জমিজমা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আটক ব্যক্তিরা শাহাদৎ হোসেনকে হত্যা করেছেন। ফলে তদন্ত শেষে ২০০১ সালের আগস্টে উল্লিখিত দুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানা পুলিশের তৎকালীন এসআই মো. লিয়াকত আলী। আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মামলায় আসামি হারুনর রশিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে উল্লিখিত কারাদ- ও অর্থদ- প্রদান করেন। এছাড়া অপর আসামি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেন আদালত।