চসিক নির্বাচনে পুলিশ অতি উৎসাহী ভূমিকায় : আমীর খসরু

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে পুলিশের ভূমিকা নিরপেক্ষ হওয়ার কথা থাকলেও অতি উৎসাহী বেশকিছু সদস্য এলাকায় এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশির নামে হয়রানি করছে।’ বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে বন্দর নগরীর নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয় মাঠে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। বুধবার রাতে চট্টগ্রাম নগর বিএনপি কার্যালয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
চসিক নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের প্রধান সমন্বয়কারী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন বানচাল করার জন্য আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে। গত দুই-তিনদিন ধরে পতেঙ্গা থেকে শুরু করে কালুরঘাট পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীসহ দায়িত্বশীল নেতাকর্মীকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি দল ও পুলিশের শত উসকানি সত্ত্বেও বিএনপি নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যাবে না। আওয়ামী লীগ একটি অগণতান্ত্রিক দল। তাদের তাঁবেদার নির্বাচন কমিশনের কাছে কখনও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা যায় না। তারপরও দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি নির্বাচনের মাঠে নেমেছে। কারণ বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচনী সংস্কৃতি বিলুপ্ত করে ফেলবে।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আগামী যে কয়দিন আছে, সেই দিনগুলো কীভাবে কাটবে তা পুরোপুরি অনিশ্চিত। গতকালও নাসিমন ভবনের নির্বাচনী কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুর করেছে। নিজেদের ক্যাম্প ভেঙে ইস্যু তৈরি করে তারা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা করেছে। যেখানে নেতাকর্মীরা অনুপস্থিত, সেখানে বিএনপির নেতাকর্মীদের পরিবারকে হেনস্তা করা হচ্ছে।’ ‘অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। সেটি না করে তারা নির্বাচনী কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে। তারা এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, যাতে মানুষ নির্বাচনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, ভোটকেন্দ্রে না যায়। গেলেও তাদের নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় পুরো নির্বাচন চলে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই নির্বাচনের তো কোনো প্রয়োজন নেই।’ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে পুলিশকে নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধানসহ নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
সংবাদ সম্মেলন লাগাতার হামলা ও সংঘর্ষের তথ্য তুলে ধরে অভিযোগ করা হয়, বুধবার রাতে নাসিমন ভবনের বিএনপির দলীয় ও মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্বাচনী কার্যালয়ে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ কর্মীরা হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন এবং আবু সুফিয়ানের গাড়ি। কিন্তু পুলিশ এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এস এম সাইফুল আলম, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, সাবেক চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।