ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকলের পরিত্যক্ত ভবনে শ্রমিকদের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

0

কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)সংবাদদাতা ॥ ঢাকা-খুলনা সড়কে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর শহরের বলিদাপাড়ায় অবস্থিত দেশের অন্যতম ভারীশিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ চিনিকল। এ মিলের শ্রমিক কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাস করে আসছেন। ১৯৬৫ সালে নির্মিত এ মিলের শ্রমিকদের বসবাসের জন্য ই-টাইপের তিনটি তিনতলা, এফ টাইপের তিনটি তিনতলা এবং এফ টাইপের একটি একতলা ভবন তৈরি করা হয়। এসব ভবনে ৯০ জন শ্র্রমিক বসবাস করছেন। এর মধ্যে ২নস্বর ভবনটি একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ৭ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরিত্যক্ত ঘোষণার পর ওই ভবনে এখনো ১৮ শ্রমিক বসবাস করছেন। যদিও বসবাসকারীরা বলছেন, জীবনের ঝুঁকি হলেও প্রয়াজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে তারা এখানে থাকছেন। একইভাবে বসবাস করছেন টিনশেডের তৈরি মিল কলোনির শতাধিক শ্রমিক কর্মচারীর পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিল অভ্যন্তরের এসব ভবনের আরসিসি কাজের জমাট মতা ৯০ ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। ছাদ, বিমসহ রেলিং ও ড্রপওয়াল বিপজ্জনক হয়ে গেছে। অধিকাংশ স্থানেই সিমেন্ট বালি ধসে পড়ছে। ফলে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ২নম্বর ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও ১ ও ৩ নম্বর ভবনও ঝুঁকিপুর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘ ৫২ বছরে মিলের নানা পরিবর্তন হলেও শ্রমিকদের বসবাসের ঘরগুলোর কোন উন্নয়ন করা হয়নি। অথচ দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের কাছ থেকে এসব নি¤œমানের ঘরের ভাড়া বাবদ বেতনের শতকরা ১০ ভাগ কেটে নেয়া হচ্ছে। একই অবস্থা মিল অভ্যন্তরে টিনসেডে বসবাসকারীদের।
মোচিক’র প্রকৌশলী মহিদুল ইসলাম জানান, পরিত্যক্ত ভবনে যারা থাকেন তাদের ইচ্ছাতেই থাকেন। ভালো আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়ে তারা থাকছেন। তাছাড়া ১৯৬৬-৬৭ সালে চিনিকলের শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য নির্মাণ করা এসব ভবনগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়াও স্বাভাবিক। তবে, আমরা অভিযোগ পেলে মেরামত করে দিচ্ছি। শ্রমিক কর্মচারীদের পরিবারের কথা চিন্তা করে নিয়মিত মেরামতের কাজ করা হয়ে থাকে। টিনসেডের কলোনিতে বসবাসকারী বাবুল হোসেন জানান, ঘরের টিন বিভিন্ন স্থানে ফুটো হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। পানি ঠেকাতে হাড়ি পাতিল পাততে হয়। রাতে বৃষ্টি হলে অনেককে যতণ বৃষ্টি হয় ততণ বসে থাকতে হয়। অভিযোগ দেওয়ার পরও কর্তৃপ মেরামত করেন না। তবে অনেক বছর আগে কোন সমস্যা হলেই মেরামত করে দিতেন। চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, ভবনটি প্রায় ৫২ বছর আগের নির্মিত। বর্তমানে ভবনটির কার্যমতা নষ্ট হয়ে গেছে। অত্যন্ত ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ার পরও শ্রমিকরা থাকছেন। তারা তাদের নিরাপত্তা ও চাকুরির প্রয়োজনে অনেকটা বাধ্য হয়েই এসব ভবনে বসবাস করছেন। তারপরও নির্মাণ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আছেন তারা নিয়মিত দেখভাল করছেন। চেষ্টা করছেন কিছুটা মেরামত করে বসবাসের উপযোগী করে তোলার।