মণিরামপুরে জমি দখল করে বালি উত্তোলনের অভিযোগ আদালতে

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কায়েমকোলা গ্রামের স্থানীয় একটি মসজিদের মুয়াজ্জিনের জমি থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বাধা দেওয়ায় মুয়াজ্জিন ও তার স্বজনদের হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এর প্রেক্ষিতে ওই জমিতে প্রতিপক্ষের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন জানিয়েছেন মুয়াজ্জিন। আদালত এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মনিরামপুর থানা পুলিশের ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী মুয়াজ্জিনের নাম মিলন হোসেন। তিনি উপজেলার হরিহরনগর ইউনিয়নের কায়েমকোলা গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে। মুয়াজ্জিনের মামা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তার ভাগ্নে মিলন হোসেন স্থানীয় একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন। ৩-৪ মাস আগে ভাগ্নে তার সাড়ে ৪ বিঘা জমি খনন করে মাছ চাষ করার জন্য মনিরামপুরের রেজাউল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে মৌখিকভাবে লিজ দেন। শর্ত ছিলো ৮ ফুট গভীরে খনন করে তিনি পুকুর তৈরি করবেন। লিজ নেওয়ার পর রেজাউল ইসলাম খনন কাজ শুরু করলে তার কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন হরিহরনগর ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে মনির হোসেন। কিন্তু চাঁদা না দেওয়ায় তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিলে পুকুর খনন অসমাপ্ত রেখে চলে যান রেজাউল। এরই মধ্যে মনির হোসেন পুকুর খননের জন্য রেজাউল ইসলামের কাছ থেকে কাজটি নিয়েছেন এমন কথা প্রচার করে ওই জমি দখলে নেন। সরল মনে ভাগ্নে মিলন হোসেন তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করেন। তবে পুকুরের মাটি খননের সাথে সাথে নিচ থেকে স্যালো মেসিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করে বিক্রি শুরু করেন মনির হোসেন। অন্তত ৩ লাখ টাকার বালু বিক্রি করেন তিনি। এছাড়া ৫১৮ ট্রাক মাটিও বিক্রি করেছেন ওই মনির হোসেন। এক পর্যায়ে ভাগ্নে মিলন হোসেন বুঝতে পারেন, ৮ ফুটের আরও গভীর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এবং রেজাউল ইসলাম পুকুর খননের কাজটি মনির হোসেনকে দেয়নি। এরপর তিনি বিষয়টি ঢাকায় তার মামা জাহাঙ্গীর হোসেনকে জানান।সে সময় তিনি ঢাকায় ছিলেন। এ ঘটনাটি জানতে পেরে ঢাকা থেকে এসে জাহাঙ্গীর হোসেন ভাগ্নের জমি থেকে বালু উত্তোলনের জন্য মনির হোসেনের রেখে দেয়া স্যালো মেসিন সরিয়ে দেন। এছাড়া খননকৃত পুকুর পাড়ে স্তুপকৃত বালু মনির হোসেনকে নিয়ে যেতে বাধা দেন। স্তুপকৃত বালুর পরিমাণ অন্তত ২০ ট্রাক। এর প্রেক্ষিতে ক্ষিপ্ত হয়ে মনির হোসেন তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে চলেছেন। ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। জাহাঙ্গীর হোসেন আরও জানান, তার ভাগ্নে মিলন হোসেন ওই জমিতে মনির হোসেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য গত ১৭ ডিসেম্বর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন জানান। যা তদন্তপূর্বক ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মনিরামপুর থানা পুলিশের ওসিকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। যোগাযোগ করা হলে মনির হোসেন জানান, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। তিনি কারো কাছে চাঁদা দাবি করেননি। ওই জমির জন্য রেজাউল ইসলাম তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তাছাড়া বালু ও মাটি বিক্রির কথাও সত্য নয়। মাটি বিক্রি করেছেন মিলন হোসেনের মামা রেজাউল ইসলাম। এক প্রশ্নের জবাবে মনির হোসেন স্বীকার করেন যে, জমির বিষয়ে তার কোনো লিখিত চুক্তিপত্র নেই।