বেনাপোল কাস্টমসে সাড়ে ১৯ কেজি সোনা চুরির মামলায় রাজস্ব কর্মকর্তার স্বীকারোক্তি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর বেনাপোল কাস্টমস হাউসের প্রায় সাড়ে ১৯ কেজি সোনা চুরির মামলায় আটক ভোল্ট ইনচার্জ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সরদার বুধবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, ‘বিভিন্ন সময় ভোল্টের ইনচার্জের দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তারা চাবি নিয়ে তাদের বাড়িতে যেতেন। তবে কখন কোন কর্মকর্তার কাছে থাকা চাবি নিয়ে কে বা কারা ডুপ্লিকেট চাবি তৈরি করে ভোল্ট থেকে সোনা চুরি করেছেন তা তিনি জানেন না, কিন্তু তিনি নির্দোষ।’ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শম্পা বসু তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আটক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সরদার রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলার বাঁধুলী গ্রামের খালপাড়া এলাকার মৃত জালাল সরদারের ছেলে। গত মঙ্গলবার সিআইডি পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। কিন্তু রিমান্ডের একদিন পরই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে শাহিবুল সরদার আরও জানান, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের পুরাতন ভবনের ২য় তলার গোডাউনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এই গোডাউনের বিভিন্ন ভোল্টে সোনা ও বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষিত ছিল। ২ মাস আগে তিনি গোডাউনের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন আগের কর্মকর্তার কাছ থেকে। কাগজপত্র অনুযায়ী ভোল্টের মালামালও বুঝে নেন। আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা গোডাউন ও ভোল্টের চাবি বাড়ি নিয়ে যেতেন। তাদের মত তিনিও গোডাউনের চাবি বাড়িতে নিয়ে যেতেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বরের রাত ৮ টা থেকে ১১ নভেম্বর সকাল ৮টার মধ্যে যে কোনো সময় বেনাপোল কাস্টমস হাউসের পুরাতন ভবনের ২য় তলার গোডাউনের তালা ভেঙে চোরেরা ভোল্টের তালা খুলে ১৯ কেজি ৩১৮ দশমিক ৩ গ্রাম সোনা চুরি করে নিয়ে যায়। যার মূল্য ১০ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৬২ টাকা। এই ভোল্টের চাবি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সরদারের কাছেই থাকতো। এ ছাড়া গোডাউনের বিভিন্ন লকারে সোনাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র থাকলেও সেগুলো অক্ষত ছিলো। তবে সোনা চুরির সময় সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিলো। বিষয়টি জানাজানি হলে কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা এমদাদুল হক অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা করেন। একই সাথে কর্তৃপক্ষ গোডাউন ইনচার্জ শাহিবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপরই পুলিশ তাকে এই মামলায় আটক করে।