চৌগাছায় শব্দ দূষনে মেতে উঠেছে একটি মহল ॥ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি

0

স্টাফ রিপোর্টার চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় পরিকল্পিত ভাবে একটি মহল শব্দ দূষনে মেতে উঠেছে এমন অভিযোগ এখন মুখে মুখে। ধর্মীয় উৎসব, সভা সমাবেশ, খেলাধুলা, প্রাইভেট হাসপাতাল, মাছ, মুরগী ব্যবসায়ী এমনকি ভাজামুড়ি বিক্রেতাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি তার কাজে যততত্র মাইক ব্যবহার করছেন। ফলে বাজারে আসা এমনকি বাসা বাড়িতে থাকা সব বয়সের মানুষ প্রতি দিনই চরম বিপাকে পড়ছেন। শব্দ দূষনে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ঠদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার সচেতন মহল।
চৌগাছা শুধু যে ব্যবসা বান্ধব উপজেলা এমনটি না, বসবাস, চাষাবাদ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াত এক কথায় সব দিক দিয়ে সকলের পছন্দের একটি উপজেলা হিসেবে ইতোমধ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে। তরতর করে উন্নতীর শিখরে উঠছে সীমান্তবর্তী এই উপজেলা। শান্তি প্রিয় উপজেলাবাসি শব্দ দূষনের কাছে চরম অসহায় হয়ে পড়েছে। শহর বা শহরতলীতে নিয়মিত ভাবে শব্দ দূষন করে যাচ্ছে একটি মহল। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে এমনটিই মনে করছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসি।
সূত্র জানায়, সারা বছরই দিনে রাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশ, বিয়ে সহ মৌসুমি অনুষ্ঠান লেগেই আছে। আর শীতকালে বিভিন্ন ধর্মীয় সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক আয়োজনও বাড়ে। যথারীতি এ সব অনুষ্ঠনে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দ তৈরীতে থাকে একাধিক মাইক। এছাড়া প্রায় প্রতি দিনই পৌর সদরসহ গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন ক্লিনিক তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রচারে ব্যবহার করছে মাইক। একই অবস্থা মাছ, মুরগী, ভাজামুড়ি, আ্ইসক্রিম, মোবাইল সিম কোম্পানী সীম বিক্রির বেলাতেও। তারা সকাল থেকে শুরু করে রাত অবাধি উচ্চস্বরে মাইকে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। মাইকের শব্দে অস্থির হয়ে উঠেছে মানুষ। পৌর এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী ও বাসিন্দা জানান, দুঃখজনক হলেও সত্য একটি মহল পরিকল্পিত ভাবে শব্দ দূষনে মেতে উঠেছে। তাদের কর্মকান্ড দেখে সাধারণ মানুষ হতাশ হচ্ছেন। হোটেলে ভাল পরেটা ভাজা হচ্ছে সেটিও মাইকে প্রচার করে চলছে হোটেল ব্যবসায়ী। মোবাইল সিম কার্ড বিক্রি করা হবে তার জন্যও বের করা হচ্ছে প্রচার মাইক। বাজারের মাছ কম দামে বিক্রি করা হবে প্রচার হচ্ছে মাইকে। যত্রতত্র মাইকের শব্দে মানুষ এখন অস্থির। বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত প্রচার মাইক গুলো কোথায় হাসপাতাল বা ক্লিনিক, কোথায় মসজিদ মন্দির কিংবা আবাসিক এলাকা কোন কিছুই যেন দেখার সময় নেই। নামাজের ওয়াক্তেও চালানো হচ্ছে উচ্চ স্বরে মাইক। শব্দ দূষনের কারনে মানুষের কানের বিভিন্ন রোগ এমনকি মস্তিস্কেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে হৃদরোগী ও মস্তিস্কে রক্তক্ষরনের ঘটনাও ঘটে শব্দ দূষনের কারনে। এ সব নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সোচ্চার থাকার কথা থাকলেও অনেক সময় দেখা যায়, তাদের কর্মকান্ডই মাইকে প্রচার করা হচ্ছে নিয়মবহির্ভূত ভাবে। এ ক্ষেত্রে অনেকেই বিদ্যমান শব্দ দূষন (নিয়ন্ত্রন) বিধিমালা-২০০৬ আমলে নিচ্ছেন না।
সূত্র জানায়, লাউডস্পিকার ও সাউন্ড সিস্টেমসহ যততত্র মাইক ব্যবহারে কঠোর হচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেন। মাঠ প্রশাসন এ নিয়ে স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনকে চিঠিও দিয়েছেন। সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ। যেকোন মূল্যে শব্দ দূষন নিয়ন্ত্রনে আনতে হবে এমনটিই মনে করছেন উপজেলার সচেতন মহল। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী মোঃ এনামুল হক বলেন, শব্দ দূষন নিয়ন্ত্রনে একটি নির্দেশনা এসেছে। আগামী মাসিক আইন শৃংখলা সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।