আন্তর্জাতিক সংবাদ

0

এবার ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানি কমান্ডারকে হত্যা
লোকসমাজ ডস্কে॥ এবার ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ডের (আইআরজিসি) একজন ঊর্ধ্বতন কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার রাতে সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। ইরাকি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি এ খবর দিয়েছে। ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিযাদেহকে হত্যার ঠিক দুইদিন পর এ হামলা চালানো হলো। ইরাক থেকে আল কাইম সীমান্ত দিয়ে সিরিয়াতে ঢুকতেই আইআরজিসি কমান্ডারের গাড়িবহর অজ্ঞাতনামা ড্রোন হামলার শিকার হয়। তার সঙ্গে থাকা তিন সহচরও এতে নিহত হন। নিহতদের দেহ ইরাকের রাজধানী বাগদাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়। ঘটনা নিয়ে এখনো মুখ খোলেনি তেহরান। ফলে ওই কমান্ডারের পরিচয় সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারা এ ড্রোন হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে সেটিও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। শুক্রবার তেহরানের কাছে দামাভান্দ কাউন্টির আবসার্ড এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন ফখরিযাদেহ। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে মারা যান। এ ঘটনার হত্যার জন্য ইসরায়েলসহ আন্তর্জাতিক শক্তিকে দায়ী করেছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ফখরিযাদেহ ছিলেন সর্বাধিক খ্যাতিমান ইরানি পরমাণুবিজ্ঞানী এবং অভিজাত ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোরের সিনিয়র অফিসার। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা তাকে ‘ইরানি বোমার জনক’ হিসেবে অভিহিত করতেন। ২০১৮ সালে ইসরায়েলের থেকে পাওয়া গোপন নথি অনুসারে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির একটি কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সোমবার ফখরিযাদেহর জানাজায় ইরানের প্রতিরা মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি জানান, হত্যাকারীদের ছেড়ে দেওয়া হবে না। চলতি বছরের শুরুতে ড্রোন হামলা চালিয়ে দেশটির প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছেই ওই হামলায় নিহত হন ইরাকি মিলিশিয়ার একজন শীর্ষ কমান্ডারও।

অবশেষে কাশ্মীর নিয়ে মুখ খুলল ওআইসি, ক্ষুুব্ধ ভারত
লোকসমাজ ডস্কে॥ অবশেষে ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল নিয়ে মুখ খুলেছে মুসলিম দেশগুলোর জোট ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসি। বিবিসি জানায়, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজের ৫৭টি মুসলিম দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দুদিনের এক বৈঠকে শনিবার কাশ্মীর ইস্যুতে সর্বসম্মতভাবে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবটিতে ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলকে বেশ শক্ত ভাষায় নিন্দা করা হয়েছে। এমনকি গত বছর ৫ আগস্টের ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য ভারতকে আহ্বানও জানিয়েছে ওআইসি। একই সঙ্গে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় সংস্থাটির প্রস্তাবে। কাশ্মীরে ‘ভুয়া এনকাউন্টার’ করে আইনবহির্ভূত হত্যা, ‘তল্লাশি ও ঘেরাও’ অভিযান এবং শাস্তির কৌশল হিসেবে কাশ্মীরিদের বাড়ি-ঘর এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়া, সাধারণ মানুষের ওপর ‘পেলেট’ বুলেট ছোড়া এবং ‘ভারতীয় সৈন্যদের হাতের কাশ্মীরি নারীদের হেনস্তার’ নিন্দা জানানো হয়। ভারত যেভাবে কাশ্মীরে ‘আন্তর্জাতিক এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে, আন্তর্জাতিক প্রস্তাব অগ্রাহ্য করছে’ তার বিবেচনায় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘পুনর্বিবেচনা’ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে ওআইসির প্রস্তাবে। ওআইসি জানায়, কাশ্মীর একটি অমীমাংসিত ইস্যু এবং নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণে কাশ্মীরিদের অধিকারের বিষয়টি জাতিসংঘের এজেন্ডাতে থাকলেও গত ৭০ বছর ধরে অমীমাংসিত রয়ে গেছে। এদিকে সংস্থাটির এ প্রস্তাবে ভারত সরকার তীব্র ােভ প্রকাশ করেছে। এক প্রতিক্রিয়ায় ভারত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘কেন্দ্র শাসিত জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আমরা সব সময় বলেছি ভারতের যে কোনো অভ্যন্তরীণ ইস্যু নিয়ে কথা বলার কোনো এখতিয়ার ওআইসির নেই।’ বিবৃতিতে বলা হয়, ওআইসির প্রস্তাবে ভারতকে নিয়ে যেসব কথা বলা হয়েছে তা তথ্যগত-ভাবে ভুল এবং অনভিপ্রেত ফলে ওই সব বক্তব্য ভারত পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করছে।

অস্ট্রেলিয়ার কাছে মা চাইবে না চীন
লোকসমাজ ডস্কে॥ টুইটারে ভুয়া ছবি পোস্ট করা নিয়ে চীন-অস্ট্রেলিয়া উত্তেজনা আরও বাড়ছে।ওই ছবির জন্য অস্ট্রেলিয়ার কাছে মা চাইতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উল্টো দেশটির কড়া সমালোচনা করেছে চীন।বেইজিং বলেছে, আফগানিস্তানে অস্ট্রেলীয় সেনাদের যুদ্ধাপরাধ থেকে ‘মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়ার’ চেষ্টা চালাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। চীনের সরকারি মুখপাত্রের টুইটার অ্যাকাউন্টে অস্ট্রেলীয় এক সেনার আফগান শিশু হত্যার ভুয়া ছবি পোস্ট করায় বেইজিংকে মা চাইতে বলেছিল অস্ট্রেলিয়া। ছবিটিকে ‘অবমাননাকর’ বলে নিন্দা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। চীন এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাড়তে থাকা রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে সোমবার এ ছবি পোস্টের ঘটনা ঘটে। বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার চীনা দূতাবাস ওই ঘটনার জন্য মা না চেয়ে পাল্টা আক্রমণ করে এক বিবৃতিতে বলেছে, “এ অভিযোগের পেছনে উদ্দেশ্য দুটি। এক, অস্ট্রেলিয়ার কিছু সেনার ভয়াবহ নৃশংস কর্মকাণ্ড থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া। আর দুই, দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতির জন্য চীনকে দায়ী করা। তাছাড়া, দেশের ভেতর জাতীয়তাবাদ উসকে দেওয়ার চেষ্টাও হতে পারে এটি।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আফগানিস্তানে অস্ট্রেলীয় সেনারা যে অপরাধ করেছে অস্ট্রেলিয়াকে এর মুখোমুখি হওয়া এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করার পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছি।” এ মাসের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স (এডিএফ) তাদের প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে,২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বন্দি, কৃষক ও বেসামরিক আফগান নাগরিকদেরকে হত্যার ঘটনায় ২৫ অস্ট্রেলীয় সেনা বেআইনিভাবে সরাসরি কিংবা পরোােভাবে অংশ নিয়েছিল। অস্ট্রেলীয় সেনাদের এই অপকীর্তি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পুলিশী তদন্ত শুরু হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া তাদের বিশেষ বাহিনীর অন্তত ১৩ সেনাকে চাকরিচ্যুত করার উদ্যোগও নিয়েছে।