মনিরামপুরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জাল নিবন্ধন সনদ সরবরাহের অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর (যশোর) ॥ মনিরামপুর উপজেলার ধলিগাতী-সুন্দলপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম এ ওয়াদুদের বিরুদ্ধে জাল নিবন্ধন সনদ সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আরবি প্রভাষক ফিরোজা খাতুনের অভিযোগ, পরীক্ষায় অংশ না নিলেও আসল নিবন্ধন সার্টিফিকেট ম্যানেজ করে দেবেন এমন আশ্বাসে অধ্যকে তিনি ৮০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। আর ওই নিবন্ধন সনদেই অধ্যক্ষ ওয়াদুদ তার মাদ্রাসায় ফিরোজা খাতুনকে আরবি প্রভাষক পদে নিয়োগ দেন। সেই মোতাবেক ফিরোজা খাতুন দীর্ঘ সাত বছর ধরে চাকরি করে আসছেন। কিন্তু পরবর্তিতে ফিরোজা খাতুনসহ সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন অধ্যক্ষের সরবরাহকৃত সনদ জাল। তার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার সুন্দলপুর গ্রামের ইজাহার আলীর মেয়ে ফিরোজা খাতুনের সাথে স্থানীয় এক মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিয়ে হয়। স্বামীর সংসারে বেশি দিন টিকতে পারেননি তিনি। তালাকপ্রাপ্ত হয়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। কামিল পাশ ফিরোজা খাতুন পিতার সংসারে বোঝা হয়ে থাকতে চাননি। তিনি চাকরি খুঁজতে থাকেন । আর এ সুযোগে ধলিগাতী-সুন্দলপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম এ ওয়াদুদ তাকে আরবি প্রভাষক পদে চাকরির লোভ দেখান। আর এ জন্য তাকে প্রস্তাব দেওয়া হয় ডোনেশন বাবদ মাদ্রাসার নামে ১২ শতক জমি এবং দুই লাখ টাকা দেয়ার। ফিরোজা খাতুনের পিতা ১২ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়ে এক লাখ ৮৫ হাজার টাতা তুলে দেন অধ্যক্ষ ওয়াদুদের হাতে। আরবি প্রভাষক পদে চাকরি করতে কামিল পাশের পাশাপাশি নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। সে ক্ষেত্রে ফিরোজা খাতুন কামিল পাশ করলেও তিনি কখনও নিবন্ধন পরীক্ষা দেননি। কিন্তু ফিরোজা খাতুনের অভিযোগ অধ্যক্ষ ওয়াদুদ ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে নিবন্ধন সনদ সরবরাহ করেন। তাকে চাকরি দেওয়ার জন্য পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল যশোর এমএম কলেজে নিয়োগবোর্ডের আয়োজন করা হয়। ওই বোর্ডে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ফিরোজা খাতুনসহ চারজন প্রার্থী। পরীায় প্রথম করে ফিরোজা খাতুনকে আরবি প্রভাষক পদে চাকরি দেওয়া হয়। ফিরোজা খাতুন নিয়োগপত্র পেয়ে ৫ মে মাদ্রাসায় আরবি প্রভাষক পদে যোগদান করেন। সেই থেকে তিনি চাকরি করে আসছেন। ফিরোজা খাতুন জানান, ২০১৬ সালে মন্ত্রণালয় থেকে ওই মাদ্রাসায় অডিটে আসলে তার নিবন্ধন সনদটি জাল বলে বিবেচিত হয়। আর এ বিষয়টি জানার পর জাল সনদ সরবরাহের প্রতিবাদে ফিরোজা খাতুন অধ্যক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু অধ্যক্ষ ওয়াদুদ তাকে অভয় দেন এতে কিছু হবে না। সবকিছুই তিনি ঠিক করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তাকে। সেই আশায় ফিরোজা খাতুন এখনও চাকরি করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি সরকার দেশব্যাপী নিবন্ধন সনদ যাচাইবাছাই শুরু করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে ফিরোজা খাতুনের নিবন্ধন সনদটি আবারও জনস্মমুখে এসেছে। তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম এ ওয়াদুদ(বর্তমান সুপারের স্কেলে এমপিওভুক্ত) ফিরোজা খাতুনের জাল সনদ সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। তবে মাদ্রাসার নামে জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে গভর্নিংবডির সভাপতি আবদুর রশিদ জানান, নিয়োগের সময় তিনি জানতেন না ফিরোজার নিবন্ধন সনদটি জাল। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, ভুয়া নিবন্ধন সনদে ফিরোজা খাতুন কোনদিন এমপিওভুক্ত হবেন না।