যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল: ওয়ার্ড প্রস্তুতের ৩ মাস পরও চালু হয়নি করোনা রোগীদের আইসিইউ

0

বিএম আসাদ ॥ ওয়ার্ড প্রস্তুত করার পর ৩ মাসেও চালু হয়নি যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আইসিইউ। ফলে, মুমূর্ষু করোনা রোগীদের চিকিৎসায় চরম সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, জেলায় এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৩শ ৬৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। রাজধানী ঢাকার বাইরে জেলা পর্যায়ে যশোরে কোভিড-১৯ সংক্রমণের আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। এ পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোভিড-১৯ সংক্রমণে মুমূর্ষু রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য হাসপাতালে আইসিইউ চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যশোর জেলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্তটি পাস হয়। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আইসিইউ চালু করার ব্যাপারে অনুমোদন দেয়। লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে হাসপাতালের ২য় তলায় সাবেক মহিলা অর্থো-সার্জারি প্রস্তুত করা হয় আইসিইউ ইউনিট হিসেবে। কিন্তু ঘর আছে তো চিকিৎসার উপকরণ নেই এমন অবস্থা হাসপাতালের আইসিইউতে। আইসিইউ চালু করার জন্য ৬টি ভেন্টিলেটর এসেছে হাসপাতালে। ২৬ নভেম্বর এসেছে পাইপ। অথচ মনিটর, আইইউ বেডসহ অমান্য উপকরণ দেয়া হয়নি এখনো। গত আগস্ট মাস থেকে আইসিইউ এভাবে পড়ে আছে। চালু হবে বললেও এখনো চালু করতে পারেনি। কয়েক মাস ধরে চলছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট নির্মাণের কাজ। এ ব্যাপারে চুক্তি হয়েছে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সাথে। চুক্তির মেয়াদও শেষ হতে চলেছে। অথচ আইসিইউতে অক্সিজন প্লান্ট থেকে সিলিন্ডারের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। লিকুইড অক্সিজেন সংযোগ দেয়ার কাজ অপেক্ষামান রয়েছে আইসিইউসহ হাসপাতালের সকল ওয়ার্ডে। কিন্তু সঠিক তদারকির অভাবে কোন কাজেরই দ্রুত অগ্রগতি হচ্ছে না। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফোরা এ হাসপাতাল পরিদর্শন করে আইসিইউ চালু করার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার আাশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি এ পর্যন্ত। শুধু করোনায় আক্রান্ত নয় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীরা এ ইউনিটে চিকিৎসা নিতে পারেন। কিন্তু কোনো রোগী উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছে না আইসিইউ চালু না হওয়ার কারণে। ফলে হাজার হাজার টাকা খরচ করে রোগীদের যেতে হচ্ছে ঢাকা কিংবা খুলনা মহানগরীতে। এ পরিস্থিতিতে যশোরের সচেতন মহল ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আইসিইউ দ্রুত চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ দিলীপ কুমার রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক লোকসমাজকে বলেন, আগামী ২/৩ মাসের ভেতর হাসপাতালে আইসিইউ চালু হবে। উপকরণ কিছু এসেছে। আরো আসবে। এখন অক্সিজেন প্লান্টের কাজ চলছে। প্রথমে সিলিন্ডার অক্সিজেন দিয়ে প্লান্ট চলবে। পরে লিকুইড অক্সিজেনের সংযোগ দেয়া হবে। আইসিইউ-এর পাশাপাশি হাসপাতালের সকল ওয়ার্ডে অক্সিজেন প্লান্টের সংযোগ দেয়ার কাজ চলছে।