যশোরের লোন অফিস পাড়ায় কলেজছাত্রী সোহানা হত্যা মামলায় পিতা আটক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায় কলেজছাত্রী সোহানা হত্যা মামলার আসামি নিহতের পিতা সালাউদ্দিন সুজনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। গত সোমবার রাতে তাকে শহরের রেলগেট এলাকা থেকে আটক করা হয়। তিনি লোন অফিস পাড়ার শেখ সিরাজ উদ্দিনের ছেলে। মঙ্গলবার আটক সালাউদ্দিন সুজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২৬ বছর আগে আসামি সালাউদ্দিনের সাথে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার তারাউজিয়াল গ্রামের শাহীনা আক্তারের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে ২০০১ সালের ১০ ডিসেম্বর তাদের সোহানা নামে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু শাহীনার স্বামী সালাউদ্দিন মাদকাসক্ত। এ কারণে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। মেয়ে সোহনাকে তার বাবা যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ার বাড়িতে এনে রাখেন। পরে পারভীন খাতুন নামে এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন সালাউদ্দিন। এসময় মেয়ে সোহানা বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে শাহীনা মেয়ে সোহানাকে মাগুরায় বাবার বাড়িতে নিয়ে যান। কিন্তু কিছুদিন পর ইচ্ছার বিরুদ্ধে সালাউদ্দিনসহ পরিবারের কয়েকজনে মাগুরায় গিয়ে সোহানাকে জোর করে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় সালাউদ্দিন তার মেয়েকে মারধর করেন। তবে তারা পরবর্তীতে সেখান থেকে সোহানাকে নিয়ে যান। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট সোহানা আত্মহত্যা করেছে মর্মে তার বাবা সালাউদ্দিন কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিতভাবে জানান। সোহানার গায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে থানা পুলিশ অপমৃত্যু মামলায় আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। বিষয়টি সোহানার মা শাহীনা জানতে পেরে তার মেয়েকে হত্যা ও ময়না তদন্ত রিপোর্টে তথ্য গোপন করার অভিযোগে একই বছরের ৩০ জানুয়ারি যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের আদেশে অভিযোগটি কোতয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। প্রথমে মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন সদর পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ ইনসপেক্টর ফিরোজ উদ্দিন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন পিবিআই ইনসপেক্টর আব্দুল মান্নান। উল্লেখ্য, ওই মামলায় শহরের লোন অফিস পাড়ার বাসিন্দা নিহতের বাবা সালাউদ্দিন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী পারভীন খাতুন, শেখ সিরাজ উদ্দিনের স্ত্রী সুফিয়া বেগম এবং ছেলে শেখ জালাল উদ্দিন ও শেখ জসিম উদ্দীন, যশোরের তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার ও যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. বাবলু কিশোর বিশ্বাসকে আসামি করা হয়েছিলো।