মেডিকেল শিক্ষার্থীদের অবরোধে পুলিশের লাঠিচার্জ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চার দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সরকারি এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুরে শিক্ষার্থীদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। এ সময় অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হন। গতকাল সকাল ১১টার দিকে শাহবাগে অবরোধ শুরু করেন মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তর্কবিতর্কের ঘটনা ঘটে।
দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীদের শাহবাগ মোড় থেকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে পুলিশ। বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পুলিশের লাঠিচার্জে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় ওই এলাকায় পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার সময় কয়েক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে সেশনজট কমানো এবং বেতন মওকুফসহ চার দফা দাবিতে সরকারি এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত প্রায় ৬শ’ শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করে। তারা সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে আসার চেষ্টা করে। তারা শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছলে তাদের ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল থামানোর চেষ্টা করে পুলিশ । কিন্তু শিক্ষার্থীরা পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে শাহবাগ মোড়ে চলে যান। পরে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান গ্রহণ করে। এতে ওই এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়। সমাবেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা লিফলেট বিলি করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি ছিল। তা হচ্ছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে প্রুফ পরীক্ষা না নেয়া, সেশনজট নিরসন করে যথাসময়ে কোর্স সম্পন্ন করার ব্যবস্থা, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ৬০ মাসের বেশি বেতন না নেয়া এবং মহামারির সময় পরীক্ষা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হলে দায়ভার কর্তৃপক্ষকে নেয়া। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার নবীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবিগুলো জানিয়ে আসেন মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২৮শে অক্টোবর স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে, মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের (এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্স) দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষ এবং পর্যায়ক্রমে প্রথম ও শেষ বর্ষের পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ আগামী ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে নির্ধারণ করা হয়েছে। তারা জানায়, করোনার কারণে প্রায় ৮ মাস ধরে মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা হলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। তাছাড়া কোনো শিক্ষার্থী করোনায় সংক্রমিত হলে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারলে তারা অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে পড়বেন? শাহবাগ থানার পরিদর্শক তদন্ত আরিফুর রহমান সরদার গতকাল জানান, শিক্ষার্থীদের অবরোধের তথ্য পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ থাকার কারণে আশেপাশের এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়। তাদের সেখান থেকে বারবার সরে যেতে বললে তারা পুলিশের সঙ্গে তর্কবিতর্কে লিপ্ত হয়। পরে পুলিশ হুইসেলে দিয়ে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিয়েছে বলে জানান তিনি।