আদালতে মামলাজট, ভোগান্তিতে বিচারপ্রার্থীরা

0

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি॥ করোনাকালে সাতক্ষীরায় মামলার বোঝায় ভারি হয়ে উঠেছে আদালত। বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ৬২১টি। বিচারক, কর্মচারী সংকট ও চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সাত মাস আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সাতক্ষীরার জজ আদালত ও বিচারিক আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ বলে জানিয়েছে আদালত সূত্র। এতে করে দীর্ঘ সূত্রিতায় বিচারপ্রার্থীরা প্রতিদিনই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আদালত সূত্র মতে, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সালমা আক্তার এক বছর তিন মাস আগে লিগ্যাল এইড এ বদলি হওয়ায় তার পদটি শূন্য হয়ে যায়। এখনও ওই পদে কেউ যোগদান করেননি।
সাতক্ষীরা জজ কোর্ট ও জুডিশিয়াল কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত, যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত, যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালত, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, সদর সহকারী জজ, সহকারী অতিরিক্ত জজ, তালা সহকারী জজ, কলারোয়া সহকারী জজ, দেবহাটা সহকারী জজ, কালীগঞ্জ সহকারী জজ, শ্যামনগর সহকারী জজ ও আশাশুনি সহকারী জজ আদালতে ৩১ হাজার ৮৬০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া জেলা ও দায়রা জজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম ও দ্বিতীয় আদালত এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম ও দ্বিতীয় আদালতে দায়রা, বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, বিশেষ মামলা, ফৌজদারি আপিল, ফৌজদারি রিভিশন, ফৌজদারি মিস, এসিড অপরাধ, জননিরাপত্তা, সন্ত্রাসসহ ১২ হাজার ১৭০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ নিয়ে জজ কোর্টে মামলার সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৪ হাজার ৩০টি। তবে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইউনুছ আলী কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে বলে স্বীকার করলেও সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারেননি।
এদিকে, সাতক্ষীরার মুখ্যবিচারিক হাকিম আদালত, অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালত, দ্বিতীয় ও তৃতীয় আদালত ছাড়াও আমলি আদালত, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ আদালতে ১৩ হাজার ৫৯১টি বিচারাধীন মামলা রয়েছে। অর্থাৎ সাতক্ষীরা আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা মোট ৫৭ হাজার ৬২১টি। জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, ‘বর্তমানে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম ও জ্যেষ্ঠ বিচারিক হকিম দ্বিতীয় আদালতের বিচারক পদগুলো শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই সব পদে বিচারক না থাকায় ও সাত মাস ধরে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিচার কার্যক্রম প্রায় বন্ধ থাকায় প্রতিটি আদালতে মামলার জট তৈরি হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে কর্মচারী ও কর্মকর্তা সংকট। সব মিলিয়ে বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি হতে হচ্ছে। অনতিবিলম্বে বিচারক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ না দেওয়া হলে শীতের মৌসুমে করোনা পরিস্থিতির কারণে মামলার জট আরও বেড়ে যাবে। ফলে মামলার ফাইল ভারি হয়ে যাবে। সমস্যা সমাধানে তিনি আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।