অ্যাম্বুলেন্স চালককে নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অন্য কাজে মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যু

0

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে শনিবার দুুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সুফিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকের দাবি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক না থাকায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। জানা গেছে, ওই সময় অ্যাম্বুলেন্স রেখে চালককে নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথ নিজের গাড়িতে করে অন্যত্র গিয়েছিলেন। আর এ বিষয়টি জানাজানি হলে রোগীর স্বজনসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার চান্দুয়া গ্রামের আবদুর রশিদ মোড়লের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৬৫) মনিরামপুর পৌর শহরের মোহনপুর এলাকায় তার মেয়ের বাড়িতে যাবার উদ্দেশ্যে শনিবার সকালে বাড়ি থেকে একা রওনা হন। বেলা ১১ টার দিকে পৌরশহরের মোহনপুর বটতলার পাশে সড়ক পার হওয়ার সময় ইজিবাইকের ধাক্কায় তিনি গুরুতর জখম হন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী পৌর কাউন্সিলর বাবুল আক্তার জানান, আহত গৃহবধূর মাথা ফেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অভিযোগ করা হয়েছে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকরা তেমন গুরুত্ব দেয়নি। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক সুমন নাগ জানান, রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ওই সময় রোগীর কোন স্বজন এবং সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক উপস্থিত না থাকায় যশোরে পাঠানো সম্ভব হয়নি। এদিকে খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে রোগীর স্বজনরা প্রাইভেটকার ভাড়া করে আনেন সুফিয়াকে যশোরে নিয়ে যাবার জন্য। এসময় রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিনা অনুমতিতে হাসপাতালের স্টাফরা অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পৌর কাউন্সিলর বাবুল আকতার আরও জানান, পরবর্তীতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথকে ফোনে অনুরোধ করা হলে তিনি সিলিন্ডার দেওয়ার অনুমতি দেন। কিন্তু হাসপাতালের দোতলা থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে নিচে আসার আগেই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। পরে স্বজনরা সুফিয়া বেগমের লাশ নিয়ে বাড়িতে চলে যান। মোবাইল ফোনে কথা হয় অ্যাম্বুলেন্স চালক একলাস হোসেনের সাথে। তিনি জানান, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: শুভ্রারানী দেবনাথ সরকার থেকে একটি নতুন গাড়ি বরাদ্দ পেয়েছেন। কিন্তু চালক না থাকায় তিনি তাকে(একলাস) সাথে নিয়ে ওই নতুন গাড়িতে করে ইপিআই কেন্দ্র পরির্দশন করতে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, রোগীকে চিকিৎসার ব্যাপারে কোনপ্রকার গাফিলতি করা হয়নি। তবে তার সরকারি গাড়ির চালক না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সের চালক একলাসকে নিয়ে তিনি ইপিআই টিকা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। মনিরামপুর থানার ওসি(সার্বিক) রফিকুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।