গমের বৈশ্বিক বাজারে অবস্থান শক্ত করতে চায় রাশিয়া

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ একটা সময় ছিল যখন অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্যের চাহিদা মোকাবেলায় গমের আমদানিনির্ভর ছিল রাশিয়া। কিন্তু গত ২০ বছরে আমদানিনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসেছে দেশটি। এর পরিবর্তে দেশটি এখন বৈশ্বিক গম বিক্রিতে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। গম চাষের জন্য উর্বর ভূমির কারণে দেশটির উৎপাদন আগের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে। ফলে আকর্ষণীয় দামে গমের সরবরাহ করতে সক্ষম রুশ ব্যবসায়ীরা। দেশটির গমের গন্তব্য বেড়েই চলেছে। বর্তমানে মিসর থেকে ফিলিপাইনস ১০০টির বেশি দেশ রাশিয়া থেকে গম আমদানি করছে। রফতানির এ ধারা অব্যাহত রাখতে দেশটি এখন আন্তর্জাতিক বাজারের সংখ্যা বৃদ্ধির জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে যেসব দেশে খাদ্যশস্যের মানের বিষয়ে নীতিগত কারণে রাশিয়ার গম বাজারজাত বন্ধ ছিল, সেসব দেশকে এখন আবারো রফতানির তালিকায় আনতে কাজ করছে দেশটি। খবর ব্লুমবার্গ।
এমন একটি সময় রাশিয়ার গম রফতানির পরিমাণ ও বাজার ধরার এমন উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা জানা গেল, যখন দেশটির গমের অন্যতম প্রধান ক্রেতা আলজেরিয়া তাদের থেকে আরো বেশি আমদানির আভাস দিয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, উত্তর আফ্রিকার দেশটি মূলত সৌদি আরবের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরেই গম রফতানির পরিমাণ বাড়াতে কাজ করছিল রাশিয়া, গত বছরে যে চেষ্টা সফল হয়েছে।
বৈশ্বিক খাদ্যশস্যের বাজারে রাশিয়ার এমন আধিপত্যশীল হয়ে ওঠার পেছনে দেশটির অনুকূল আবহাওয়া এবং নীতিসহায়তা অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিআরএম এগ্রিকমোডিটিসের পরিচালক জেমস বোলসওয়ার্থের মতে, রাশিয়ার গমের উৎপাদন ও রফতানি অবিশ্বাস্য রকম বৃদ্ধি দৃশ্যমান। খাদ্যশস্যটির বৈশ্বিক বাজারে হিস্যা বাড়াতে দেশটি এ খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে এবং সেটি অব্যাহত রয়েছে।
রাশিয়ার গমের ক্রেতা তালিকায় আলজেরিয়া তৃতীয় নম্বরে রয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত দেশটিতে খুবই অল্প পরিমাণ গম রফতানি করতে সক্ষম হয়েছে রাশিয়া। তবে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রীয় খাদ্যশস্য সংস্থা সম্প্রতি জানিয়েছে, তারা তাদের পরবর্তী টেন্ডারে রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশ থেকে গম আমদানি করবে।
অন্যদিকে রাশিয়ার কৃষি সংস্থা বলছে, তারা এখন পর্যন্ত বাণিজ্যের পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি। আলজেরিয়ার টেন্ডারের মাধ্যমে এরই মধ্যে অনেকে জাহাজীকরণের কার্যাদেশ পেয়েছে। আর ফ্রান্সের একজন ব্যবসায়ীও জানিয়েছেন, দেশটি তাদের খাদ্যশস্যের মানের ক্ষেত্রে পতঙ্গবিষয়ক যে নীতি রয়েছে সেটিতে পরিবর্তন আনতে পারে। তবে আশার কথা হলো ইউরোপের দেশটিতে এরই মধ্যে গমের মানের পরীক্ষা উত্তীর্ণ হতে একটি চালান পাঠিয়েছে রাশিয়া। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে এ সরবরাহ করা হলেও সেটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে নিয়ে যেতে বেশকিছুটা সময় নেবে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।