অবশেষে বিলকপালিয়ায় চালু হল কৃষকের খবচে সেচ

0

এস.এম.মজনুর রহমান,মনিরামপুর(যশোর)॥ মনিরামপুরে ভবদহ সংলগ্ন বিল কপালিয়ার জলাবদ্ধতা নিরসনে চাষিদের উদ্যোগে স্থাপিত সেচপাম্পে অবশেষে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অভিযোগ প্রত্যাহার করায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেচ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এখন থেকে নিজেদের অর্থায়নে স্থাপিত সেচপাম্প দিয়েই পানি নিষ্কাশন করে ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখছেন বিলকপালিয়ার হাজারো কৃষক।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী অরুন কুমার কুন্ডু জানান, পাম্প স্থাপন করা ওই জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি করে যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হয়েছিল। অবশ্য পরবর্তীতে সেই অভিযোগ প্রত্যাহার করায় সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার বিল কপালিয়ার পানি নিষ্কাশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন ইউপি সদস্য কার্ত্তিক চন্দ্র মন্ডল। নেহালপুর ইউপি চেয়ারম্যান নজমুস সাদত এবং মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিয়ুর রহমান অতিথি হিসেবে সেচকার্যের উদ্বোধন করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য ফারুক হোসাইন, পরিতোষ কুমার সরকার, সমিরোন বিশ্বাষ, মানিক মন্ডল, সেচ পাম্প স্থাপনের প্রধান উদ্যোক্তা মাস্টার শাহিদুজ্জামান, আবদুর রাজ্জাক, ইউপি সদস্য অনিতা দত্ত প্রমুখ। দীর্ঘদিন জলাবদ্ধ থাকায় বিল কপালিয়ায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি রয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থেকেও কোনো লাভ হয়নি। ফলে কৃষকরা পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যক্তি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আর এ জন্য কৃষকরা নিজেদের অর্থ খরচ করে খালপাড়ে একটি শক্তিশালী পাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নেন। কৃষকরা প্রায় সাত লাখ টাকা ব্যয়ে খালপাড়ে খাস জমিতে একটি পাকা ঘর নির্মাণের পর ৩০ হর্স পাওয়ারের একটি শক্তিশালী মোটর (পাম্প) স্থাপন করেন। এ মোটরের সাহায্যে বড় বড় পাইপ দিয়ে বিল থেকে পানি নিষ্কাশন করে তারা ফসল ফলাতে পারবেন। এমন স্বপ্ননিয়ে স্থাপনকৃত পাম্প চালু করতে অস্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ আবেদন করেন। কিন্তু বাঁধ সাধে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পাম্প স্থাপন করা ওই জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি করে যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া থেকে বিরত রাখে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২। ফলে কৃষকদের মাঝে দেখা দেয় চরম হাতাশা। এলাকায় দেখা দেয় চরম উত্তেজনা। এ নিয়ে লোকসমাজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের । ফলে পাউবো সম্প্রতি তাদের সেই অভিযোগপত্র প্রত্যাহার করায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ শুক্রবার সেচ পাম্পের সংযোগ দেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম জানান, এলাকার চাষিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অভিযোগপত্র প্রত্যাহার করে অস্থায়ী ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। সেচ পাম্প স্থাপনের প্রধান উদ্যোক্তা শাহিদুজ্জামান জানান, বিদ্যুৎ সংযোগের ফলে কৃষকরা সহজেই পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে আবারও ফসল ফলাতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।