চৌগাছায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া

0

এমএ রহিম, চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছায় নিত্য প্রযোনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া। নি¤œ আয়ের মানুষের দিনাতিপাত একেবারে অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। নিত্য প্রয়োনীয় সামগ্রীর বাজারে এক প্রকার আগুন লেগেছে। ১০/১৫ দিনের ব্যবধানে চৌগাছা বাজারের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম বেড়েছে ক্ষেত্র বিশেষ কয়েক গুণ। সপ্তাখানেকের ব্যবধানে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি, কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ভোজ্যতেল, আলু, পিঁয়াজ, রসুন, বেগুন, খিরাই, কাঁচা মরিচসহ তরিতরকারির দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। মাছ, মাংস, ডিমের বাজারে যাচ্ছে না সাধারণ ক্রেতারা। অপরদিকে সরকার নিত্য প্রয়োনীয় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার ল্েয স্থানীয় ডিলারদের মাধ্যমে বাজারে ১০ টাকা কেজি চাউল বিক্রি করলেও তার কোন প্রভাব পড়েনি ক্রেতা সাধারণের মাঝে। এদিকে সরকারি ভাবে নিত্যপ্রোয়জনীয় দ্রব্য বিক্রির বিশেষ উদ্যোগ নিলেও এখনো পর্যন্ত চৌগাছাতে তার কোন প্রতিলফন হয়নি। হু-হু করে বেড়েয় চলছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। যা এখন আকাশচুম্বি সাধারণ মানুষের ক্রয় মতার বাইরে।
শুক্রবার সরেজমিনে উপজেলার বড় কাঁচা বাজার চৌগাছা, সলুয়া, পুড়াপাড়া, ধুলিয়ানী, সিংহঝুলী, হাকিমপুর, পাতিবিলা বাজারসহ অন্যান্য বাজার ঘুরে জানা যায় বাজারগুলোতে নিত্যপ্রোয়জনীয় জিনিসের দাম রাতরাতি বৃদ্ধি পেয়েছে। চৌগাছা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সর্দার এন্টার প্রাইজের মালিক এসএম শফিকুর রহমান জানান নিত্য প্রয়োনীয় পণ্যের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮-১০ টাকা। তরিতরকারির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুন। মসুরের ডাল ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০ টাকা। খেসারীর ডালের দাম কেজিতে ৪০ টাকা থেকে বেড়েছে ৬৫ টাকায়। সয়াবিন তেল বেশি কিছুদিন ধরে কেজি ৮৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল, বর্তমান মূল্য ১শ১০ টাকা। সাদা চিনির দাম কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫ টাকা। বিদেশি চিনি ৪৫ টাকা থেকে বৃদ্ধি হয়ে এখন ৬২ টাকা। চাল, আটা ও ময়দার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। এছাড়া দেশীমুরগী ৪শ৫০, গরু ৫শ, ছাগল ৮শ, বয়লার মুরগী ১শ৬০, পোল্ট্রি মুরগী ১শ ৫০ টাকা কেজি, ৩০ টি ডিমের খাচি ২শ ৭০ টাকা ও মাছের দাম যখন যেমন খুশি নিচ্ছে।
কথা হয় চৌগাছা বাজারে বাজার করতে আশা উপজেলার আন্দারকোটা গ্রামের নুরু-নব্বীর সাথে তিনি বলেন, বাড়ীতে নতুন আত্মীয় এসেছে সংসারের নিত্যপণ্য কিনতে এসেছিলাম বাজারে, ডাল, তেল, চিনি, আটা, ময়দা ও তরিতরকারি কিনতে বাড়ি থেকে যে পরিমান টাকা এনেছিলাম তাতে বাজারের অর্ধেকও হয়নি। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময়ে মধ্যবিত্তদের জন্য সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে জিনিস পত্রের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে মানুষ নাভিশ্বাস হয়ে উঠবে।
এ সময় কথা হয় ভ্যান চালক চাদপুর গ্রামের আব্দুল গনীর সাথে তিনি জানান, সারাদিন ভ্যান চালিয়ে ৩শ/৩৫০ টাকা আয় হয়। বর্তমান বাজারে ১ কেজি চালের দাম ৫৫ টাকা, তরকারি কেজি ৫০/৬০ টাকা, তেল, ঝালসহ প্রতিদিনের দরকারি জিনিসপত্র কিনে খেতে বুকে মাটি ঠেকে যাচ্ছে। অন্যদিকে সব্জির বাজারেও উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। আলু, পিয়াজ, ঝাল প্রতি কেজিতে ১৫/২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তরিতরকারি পাইকারী বাজারের মূল্য একটু কম হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে অতিচড়া দামে। প্রতিকেজি শিম ১শ টাকা, করলা ৬৫ টাকা, কঁচু ৫০ টাকা, মষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, লাউ প্রতিপিচ ৫০ টাকা, কলা ৫০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১শ ৯০টাকা, মুলা ৪০, পটল ৬০ টাকা, টমেটা ১শ ১০, পেপে ৪৫, ডাটা ২৫, পুইশাক ২৫, ভেন্ডি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।