আন্তর্জাতিক সংবাদ

0

মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধে পুরোহিতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা
লোকসমাজ ডেস্ক॥ জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভারতের রাজস্থানের একটি মন্দিরের পুরোহিতকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। জয়পুর থেকে ১৭৭ কিলোমিটার দূরে করৌলি জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে।ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, গ্রামের রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে পূজা করতেন বাবুলাল বৈষ্ণব নামের ওই ব্যক্তি। নিয়মিত যাতে তিনি মন্দিরের কাজ চালিয়ে যান, তার জন্য তাকে মন্দিরের কেয়ারটেকার পুরোহিত নিযুক্ত করে মন্দির ট্রাস্ট। কিন্তু শুধু পূজা দিয়ে সংসার চলে না। তাই মন্দিরের সম্পত্তি থেকে ১৩ বিঘা জমিতে বাবুলালকে চাষবাসের অনুমতি দেওয়া হয়। পূজা এবং মন্দির দেখভালের দায়িত্বে থাকা সেবায়েত পুরোহিতদের জমি দেওয়ার এই প্রথা দীর্ঘকাল ধরেই চলে আসছে। এই ধরনের জমিগুলোকে ‘মন্দির মাফি’ বলা হয়। কিন্তু এই জমি ঘিরেই বিবাদের সূত্রপাত। চাষবাসে সুবিধার জন্য ওই জমি সংলগ্ন একটুকরো জায়গায় বাড়ি তৈরি করতে উদ্যত হন বাবুলাল। মন্দির কর্তৃপরে কাছ থেকে পাওয়া ১৩ বিঘা জমি এবং একটুকরো ওই জমির মাঝখানে একটি উঁচু ঢিবি ছিল। মাটি সমান করতে সেই ঢিবি ভেঙে ফেলেন তিনি। তাতেই রুখে দাঁড়ান এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মিনা সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ। যে জমিতে বাবুলাল বাড়ি তৈরি করতে উদ্যত হয়েছেন, সেটি তাদের জমি বলে দাবি করেন তারা। গ্রামের মোড়লদের কাছে বিষয়টি পৌঁছালে তারা অবশ্য পুরোহিতের পইে মত দেন। তার পর ফের বাড়ি তৈরির কাজে হাত দেন তিনি।তারপরেও মিনা সম্প্রদায়ের লোকজন মিলে ওই জমিতে নিজেদের একটি কুঁড়ে ঘর তৈরি করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। তাতে বাধা দিতে গেলে বাবুলালের সঙ্গে ঝামেলা বেধে যায় তাদের। সেই সময় তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তড়িঘড়ি করে জয়পুরের এসএমএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বাবুলালকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানে মৃত্যু হয় তার।

তাবলিগ জামাত নিয়ে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা, উদ্বেগ ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের
লোকসমাজ ডেস্ক॥ বাক স্বাধীনতার মতো অধিকারের সবচেয়ে বেশি অপব্যবহার হচ্ছে সাম্প্রতিককালে। এক মামলায় বৃহস্পতিবার এমনই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির গণমাধ্যম জানায়, দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের জমায়েত নিয়ে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়াচ্ছে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। এই অভিযোগ তুলে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিল জমিয়তে উলেমা ই হিন্দ-সহ কয়েকটি সংগঠন। সেই প্রেেিতই এই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবডে। পাশাপাশি ৩ বিচারপতির বেঞ্চ এ দিন হলফনামা দাখিলের প্রক্রিয়া নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারকে ভর্ৎসনা করে। গত ২৯ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ থেকে ২ হাজার ৩৬১ জন তাবলিগ সদস্যকে করে দিয়েছিল পুলিশ। তখন দেশে করোনা সংক্রমণ সবে ছড়াতে শুরু করেছে। ওই সময় এ ঘটনাকে ঘিরে ভারত জুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। গত ৫ এপ্রিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তরফেই জানিয়ে দেওয়া হয়, ভারতের ৩০ শতাংশ করোনা সংক্রমণের সঙ্গে তাবলিগ জামাতের যোগসূত্র রয়েছে। ওই সময় দেশটিতে মোট করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৩৭৪ জন। মৃত্যু হয়েছিল মোট ৭৭ জনের। জমিয়তে উলেমা ই হিন্দ-সহ কয়েকটি সংগঠনের অভিযোগ, করোনা সংক্রমণের সঙ্গে ওই ঘটনাকে জুড়ে ‘সাম্প্রদায়িক ঘৃণা’ ছড়াতে শুরু করে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েই তারা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। এর প্রেেিতই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘ইদানীংকালে মত প্রকাশের অধিকারের সবচেয়ে বেশি অপব্যবহার হচ্ছে।’’ উল্টোদিকে সংবাদমাধ্যমের পে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার কেন্দ্র দাবি করে, ‘‘নেতিবাচকভাবে প্রতিবেদন তুলে ধরার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।’’ এ েেত্র কেন্দ্রীয় সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানাতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ভুয়া খবর প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আবেদনকারীরা যে রিপোর্টগুলোর কথা তুলে ধরেছেন, তা নিয়ে তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব কী ভাবেন তা আমাদের অবশ্যই জানাতে হবে। আবেদনকারীরা অভিযোগ করেছেন কিছু চ্যানেল ঘৃণা ছড়াচ্ছে। অথচ তা নিয়ে এই হলফনামায় কিছু বলা নেই। আমরা এটা চাতুর্য বলেই মনে করছি।’’ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবের বদলে একজন অতিরিক্ত সচিবকে দিয়ে হলফনামা দাখিল করে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই ঘটনাকে ‘চূড়ান্ত আপত্তিকর ও নির্লজ্জতা’ বলে ব্যাখ্যা করেছে শীর্ষ আদালত। এরপর আবারও হলফনামা চাওয়া হয়। সপ্তাহ দু-এক পর ফের আদালতে উঠবে ওই মামলা।

তরুণীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা, প্রতিবাদে ফুঁসছে আলজেরিয়া
লোকসমাজ ডেস্ক॥ এক তরুণীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছে আলজেরিয়ার মানুষ। নারীর প্রতি সহিংসতা রুখতে দেশটির অনেকগুলো শহরে চলছে বিােভ। বিবিসি জানায়, এ মাসের শুরুতে সাইমা সাদুউ নামে ১৯ বছরের এক তরুণী অপহরণের শিকার হন। ধর্ষণের পর তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। রাজধানী আলজিয়ার্সের থেকে ৮০ কিলোমিটার পূর্বে থেনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। একটি নির্জন পেট্রোল স্টেশান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আরব নিউজ জানায়, এ ঘটনার অভিযুক্ত রায়ান নামে এক তরুণকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাইমাকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ শিকার করেছে সে। ২০১৬ সালেও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেছিল ভুক্তভোগীর পরিবার।
এদিকে আরেক নারীর দগ্ধ মৃতদেহ এক জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয় বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়। এমন পরিস্থিতিতে আলজিয়ার্স, ওরানসহ একাধিক শহরের নারীরা রাস্তায় নেমে আসে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন পুরুষেরাও। বিােভে বাধা দিয়েছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। নারী সহিংসতার বিরুদ্ধে এ বিােভের প্রতীক হয়ে উঠেন সাইমা। তার নামে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার প্রদর্শন এবং স্লোগান দিতে থাকেন বিােভকারীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও হ্যাশট্যাগ দিয়ে ‘আই এম সাইমা’ প্রতিবাদ চালাচ্ছেন এক্টিভিস্টরা। নারী সহিংসতার জন্য তারা সরকারকে দায়ী করছেন। আলজিয়ার্সে বিােভকারী এক নারী বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীদের সুরা দেয় না সরকার। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা আইনে থাকলেও বাস্তবতা হচ্ছে নির্যাতনকারীদের মা করা দেয়ার জন্য বলে সরকার, সে ভাই, বাবা বা যেই হোক না কেন।’ তিনি বলেন, ‘নারীরা অভিযোগ করলে তার সমাধান বা রায় পাওয়ার জন্য তিন থেকে চার বছর অপো করতে হয়। এটি কোনোভাবে মেনে যায় না।’ এদিকে ফেমিসাইড আলজেরিয়া নামে একটি সংগঠন জানায়, চলতি বছরে উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে এখন পর্যন্ত সহিংসতার শিকার হয় ৩৮ জন নারী হত্যার শিকার হয়েছে। আগের বছরে এ সংখ্যা ছিল ৬০। তবে প্রতি বছর অনেক বেশি নারী সহিংসতার শিকার হয়, যেসব ঘটনা প্রকাশ্যে আসে না বা নথিভুক্ত হয় না।