ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি সবার

0

গত এক দশক ধরে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা দৃশ্যত বেড়েছে। দেশী-বিদেশী সকল পরিসংৃখ্যানে তা স্পষ্ট। তবে ইদানিং দেশে অমাননিক সব নারী নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে। সমাজ যেন ক্রমেই বর্বরতার চরমে চলে যাচ্ছে। বিচ্ছিন্ন কিছু প্রতিবাদ হলেও ব্যাপক অর্থে গণপ্রতিরোধ গড়ে উঠছে না। আবার যেটুকু উঠছে তাও পুলিশি বাধায় পন্ড হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সমাজের পরিচয় যেন পাল্টে যাচ্ছে। পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সহনশীল সমাজ থেকে নৈতিকতা যেন নির্বাসিত প্রায়। মানবিক মূল্যবোধের অবয় চরমে পৌঁছেছে। প্রায় প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও ধর্ষণ গণ ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। প্রায় প্রতিটি ঘটনায় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নাম আসছে। অভিযোগ আছে, বিচারহীনতায় ধর্ষণকারীরা ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক কারণে আইন প্রয়োগকারীরা সক্রিয়তা দেখাতে পারছে না। ফলে, মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও রাজপথে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে।
সম্প্রতি বিবেককে নাড়া দেওয়ার মতো কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে। সেখানে এক নববধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। অভিযুক্ত ধর্ষণকারী সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে খবরে প্রকাশ। এ ঘটনার প্রধান আসামিসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত শুক্রবার রাতে স্বামীকে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার পর শনিবার কলেজ কর্তৃপক্ষ শিার্থীদের ছাত্রাবাস ছাড়তে বলেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- করোনাকালে যখন দেশের সব শিাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাস বন্ধ, তখন সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাস খোলা থাকে কী করে? প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, ছাত্রাবাসে বেশ কিছু ছাত্র অবস্থান করত। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দখলে ছিল ছাত্রাবাসের অনেক ক। ছাত্রাবাসে শিকদের জন্য বরাদ্দ কও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দখল করে রেখেছিলেন। এরা প্রতিদিন ক্যাম্পাস এলাকায় ছিনতাই রাহাজানি করতো। কিন্তু কর্তৃপ রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করে। তাদের কি কোনো দায় নেই? অবশ্যই আছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে গত বুধবার গভীর রাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের এক গ্রামে পাহাড়ির বাড়িতে ডাকাতিকালে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় ওই বাড়ির একমাত্র মেয়ে। বর্বরতার শিকার তরুণী এখনও গুরুতর অসুস্থ। এ ঘটনার পর খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ বাকিদের ধরার চেষ্টা করছে বলে দাবি তাদের। অন্যদিকে সাতীরা থেকে রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা একজন রোগীকে রক্ত জোগাড় করে দেওয়ার নাম করে তাঁর স্ত্রীকে মিরপুরে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দুজনকে। এসব জঘন্য ঘটনায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে সারাদেশে। ক্ষোভে ফুসছে মানুষ। বিচারের দািবতে সোচ্চার রাজপথ। আমরা মনে করি, দ্রুততম সময়ে এসব বর্বর ধর্ষণকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার। আমরা আশা করি, ধর্ষণকারীদের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক দণ্ড দেওয়া হবে। বিশেষ করে এমসি কলেজের ধর্ষকদের গ্রেফতার ও বিচারের সময়কে গুরুত্ব দেয়াহবে। । নইলে মানুষ ধর্ষক ছাত্রলীগ কর্মীদের রক্ষার অভিযোগ তুলবে। আমরা আশা করবো, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেবে না।