মাগুরা জেলা প্রশাসকসহ আরো অনেকে হানিফের পাশে

0

মাগুরা সংবাদদাতা॥ কলেজে ভর্তির অনিশ্চয়তা কেটে গেছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার হানিফের। মহম্মদপুর সদরের আমিনুর রহমান কলেজে কোন ফি ছাড়াই ভর্তি করে নিয়েছেন অধ্যক্ষ বিপ্লব রেজা বিকো। ‘জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় হানিফ’ শিরোনামে খবর প্রকাশের পর হানিফ আলীর সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন অনেকেই। পাশে দাঁড়িয়েছেন মাগুরা জেলা প্রশাসক, মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ নানা শ্রেণি পেশার অনেক মানুষ। হানিফের মুখে এখন হাসি ফুটেছে।
মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম হানিফকে মাগুরা ফাউন্ডেশনের অধীনে দুই বছরের জন্য শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের ঘোষণা দেন। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মিজানূর রহমান কলেজ ভতির ফি বাবদ আড়াই হাজার টাকা নগদ প্রদান করেন। মহম্মদপুর সদরের আমিনুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ কোন ফি ছাড়াই ভর্তি করে নেন। এছাড়া তিনি তার বই, পোশাক ও হোস্টেলে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী বরকত আলী, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. আবু সাইদ ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সালমা ইসলাম হানিফকে আর্থিক সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া মহম্মদপুর সদরের সরকারি আর.এস.কে.এইচ ইনস্টিটিউশনের এসএসসি ১৯৯২ সালের ব্যাচের ফেসবুক গ্রুপ হানিফকে প্রথম পর্যায়ে নগদ পাঁচ হাজার টাকা দেবেন বলে জানিয়েছেন। বাবা দরিদ্র দিনমজুর। কষ্টের সংসারে বড় হয়েছে হানিফ আলী। খেয়ে না খেয়ে স্কুলে পড়ালেখা করেছে। ছিল না বই কেনার ও ফরম পূরণের টাকা। ধার করে টাকা নিয়ে ফরম পূরণ করে ২০২০ সালের এসএসসিতে জিপিএ–৫ পেয়েছে। কিন্তু এখনো সেই ধার করা টাকা পরিশোধ করতে পারেনি।এরপর কলেজে ভর্তি হওয়া ও পড়ালেখার খরচ জোগানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন হানিফ আলীর ও বাবা-মা। জমি বলতে বাড়ির সামান্য কয়েক শতাংশ জমি। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেন বাবা সোহরাব মোল্যা। বাকি সময় অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন। জীবনের সব কষ্ট অতিক্রম করে সেই হানিফ আলী এবার এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ–৫ পেয়েছে। মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া ইউনিয়নের মৌশা গ্রামের মেধাবী ছাত্র হানিফ পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতেও বৃত্তি পেয়েছিল। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড়।
হানিফ জানায়, সে এখন অনেক খুশি। সাংবাদিক ভাইয়েরা খবর দেওয়ায় এখন সে এখন আশার আলো দেখছে। হানিফের মা মনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘আমার হানিফ পড়তি পারবি শুনে আমি খুব খুশি।‘ হানিফের পড়াশোনা এগিয়ে নিতে সমাজের বিত্তবান মানুষ এগিয়ে আসায় খুব খুশি হানিফের স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামও। মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মিজানূর রহমান বলেন, ‘অর্থের অভাবে হানিফের পড়ালেখা যাতে বন্ধ না হয় সেজন্য উপজেলা প্রশাসন সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’