রামপালে মৎস্য চাষীদের শেষ আশাটুকুও ভেষে গেছে প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের প্রভাবে

0

এম,এ সবুর রানা, রামপাল (বাগেরহাট) থেকে ॥ অতি বর্ষণ ও প্রবল জোয়ারের তোড়ে রামপালে আবারও শত শত মৎস্য ঘের তলিয়ে চিংড়ি ও সাদা মাছ ভেসে গেছে। এতে মৎস্য চাষীদের অবকাঠামোসহ বিপুল পরিমান ক্ষতি হয়েছে। সরকারি ভাবে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার মৎস্য ও অবকাঠামোর ক্ষতি দেখানো হলেও মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সরজমিনে পরিদর্শণ ও চাষীদের সাথে কথা বলে পাওয়া গেছে ভয়াবহ তথ্য। চিংড়ি চাষী রামপাল সদরের কাজী কামরুল ইসলাম, শ্রীফলতলার শেখ আব্দুল ওহাব, শেখ সাহিদুল ইসলাম, ইউসুফ শেখ, রনি শেখ, রাজনগরের উৎপল মহন্ত, ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আব্দুল হান্নান ডাবলুসহ বেশ কিছু ঘের মালিকের সাথে কথা বলে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। তারা জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, আম্পান ও করোনার কারণে চিংড়ি চাষীরা একের পর এক ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকেন। উপজেলার ১০ ইউনিয়নের শত শত হেক্টর জমিতে তৈরি করা মৎস্য ঘের ভেসে ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকার। একদিকে রেনু পোনার সংকট ও দাম বৃদ্ধি অপর দিকে মাছ বিক্রিতে দাম না পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষীরা। রোগবালাই, তীব্র রোদ্রের তাপ ও অতি বর্ষণে অক্সিজেন সংকটে বিপুল পরিমানের মাছ মারা গেছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আশায় বুক বেধে নতুন করে বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আবারও মাছ ছাড়েন চাষীরা। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর আবারও অতি বর্ষণ ও জোয়ারের তোড়ে চাষীদের শেষ আশাটুকুও ভেষে গেছে। অনেকেই ক্ষেভের সাথে বলেন, একের পর এক মৎস্য চাষে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও সরকারি ভাবে কেউ কোন খোঁজ নেয়নি বা পাননি কোন আর্থিক সহায়তা। তারা জানান, কিভাবে এখন আমরা দেনা শোধ করবো? আর কি করেই বা ছেলে মেয়ে নিয়ে এই করোনার মধ্যে সংসার চালাব? রামপাল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আসাদ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, উপজেলার ভোজপাতিয়া ইউনিয়ন ও রাজনগর ইউনিয়নের মৎস্য চাষীরা সবথেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে ৩১৫টি ঘেরের ৬০.৭৭ হেক্টর জমির মাছ ভেসে গেছে, যার ক্ষতির পরিমান ৬৩ লক্ষ টাকা এবং অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। চাষীদের এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি ভাবে কোন আর্থিক সহায়তা ও প্রনোদনার ব্যবস্থা করা হবে কিনা এবিষয়ে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি এড়িয়ে যান।