করোনার বিস্তৃতি যশোরে বাড়ছে প্রতিদিন

0

বিএম আসাদ ॥ করোনা ভাইরাসের ব্রাপক সংক্রমণ ঘটেছে যশোর শহর ও শহরতলীতে। গতকাল এ জেলায় ৯৯ জন কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। তার ভেতর ৪৯ জন শহর ও সদর উপজেলায়। এ নিয়ে যশোরে ২ হাজার ৭শ’ ৬২ জন আক্রান্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬শ’ ৩২ জন। যশোর সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানিয়েছেন, গতকাল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১শ’ ৮৫টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। এর ভেতর করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ জন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হতে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে ৪৪টি। তার ভেতর ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন কোভিড-১৯-এ। সব মিলে একদিনে ২শ’ ২৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের ৪৯ জন যশোর শহর ও শহরতলীতে বসবাস করেন। এখানে আক্রান্তের হার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ শংকার ভেতরে রয়েছেন।
গতকাল আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন যশোর সদরে ৪৯ জন, কেশবপুরে ১৩ জন, ঝিকরগাছায় ১২ জন, মনিরামপুরে ৯ জন, শার্শায় ৬ জন, চৌগাছা ও অভয়নগরে ৫ জন করে ১০ জন। যার ভেতর হাসপাতালের সেবিকা, পুলিশসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন রয়েছেন। সদরে আক্রান্ত ৪৯ জনের ২০ জন পৌরসভা, ১৬ জন, ইউনিয়ন পর্যায়ে বসবাস করেন। অন্য স্থানের ১০ জন রয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছেন, পৌরসভার আক্রান্তরা হচ্ছেন- খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি, শহরের পূর্ববারান্দীপাড়ার পবিত্র কুমার (২৮), ঘোপ কবরস্থান এলাকার সুরাইয়া (২৫), ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের নুপুর (৪০), পুরাতন কসবা কাজীপাড়ার ফেরদৌস আলম (৬৫), আমতলার তৌহিদুর রহমান (৫০), পুলিশ লাইনের আব্দুল খালেক (৬৫), খুলনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন আরবপুরের মেহের আলী (৩০), খড়কির শিরিনা (৩০), রাশিদা (৭০), শারমিন নাহার (৩০), শংকরপুরের ঐশী (১৫), হায়দার আলী (৪৭), পান্না (২৮), নাজির শংকরপুরের আকমল হোসেন (৪২), সামসুল (৬৭), নীলগঞ্জ সুপারী বাগানের আহমেদ শরীফ (১৮), শরীফ হাসান (৬২), ফরিদা আক্তার (৪৯), সুপারী বাগানের জামিলা খাতুন (৪০), চৌরাস্তার ইয়াসিন আলী (৫০), বেলতলার জরিনা (৩০), যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের দু’জন সিনিয়র স্টাফ নার্স আল-মদিনা সুলতানা (৪৩), রেশমা খাতুন (৩২), শেখহাটির আজিজুল ইসলাম (৫০), নাসরিন নাহার (৩৫), বাহাদুরপুরের মাহবুবুর রহমান (২৮), নওয়াপাড়া গ্রামের হাবিবুল্লাহ ৪৬), ঘুরুলিয়ার আসাদুজ্জামান (২০), বড় ভেকুটিয়ার আকরাম আলী (৬৭), ধর্মতলার (৪৫), পূর্বপাড়ার আজম (৩৫), বড়ভেকুটিয়ার ফরিদা বেগম (৪৭), কনেজপুরের আরিফ (২৯), শানতলার আবুল কালাম আজাদ (৪৫), সতীঘাটার চন্দ্রা সরকার (২৯), হামিদপুরের রামপ্রসাদ (৪৭), পূর্বপাড়ার আতিয়ার রহমান (৫৮), ঝিকরগাছার মীর সাবিরুল ইসলাম (৩২), তারাচ্ছুম (২৪), আকরাম (৪৪), অভয়নগরের ফেরদৌস (২৯), কামন চন্দ্র (৪২), মনিরামপুরের শাহিনা বেগম (৭০), আতিকুর রহমান (২০), ঝিনাইদহের জেবুন্নেছা (৫০), আব্দুর রহিম ও রেক্সোনা (৪৫), যশোরে নমুনা পরীক্ষা দিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
শার্শায় আক্রান্তরা হলেন- দুর্গাপুরের মহাসিন আলী (৫০), মতিয়ার রহমান (৭৫), মনিরা (২২), মামুন (২৮), চৌগাছার ফুলসারার নাজমুল হাসান (৩৫), ওয়াজেদ আলী (৫৮), পাশাপোলের ইশিতা আক্তার (২৮), হাকিমপুরের বাকীবিল্লাহ (৪৮), অভয়নগরের দত্তঘাটার সাইফুল আলম (৪৩), কারমো সংকরের সজল মন্ডল (৪৭), শেভা খাতুন (১৬), গাজীপুরের হরমুজ আলী বিশ্বাস (৬০) প্রমুখ। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, যশোরে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে ব্যাপকহারে। এ ভাইরাসে গ্রামাঞ্চল থেকে শহর ও সদর উপজেলার বাসিন্দারাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে গ্রামাঞ্চলের মানুষ শহরে আসা কমে গেছে। একান্ত দরকার না হলে সচেতন মানুষ শহরে আসছেন না। এ পরিস্থিতিতে সকলকে মাস্ত ব্যবহার ও সামাজিক দুরত্ব মেনে না চললে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে।