যশোররের নারাঙ্গালী স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম # প্রতিবাদে মানববন্ধন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর সদরের নারাঙ্গালী সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে বিদ্যালয় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। করোনা ভাইরাসের মধ্যে অনেকটা গোপনে নিয়োগবোর্ড বসিয়ে পছন্দের ব্যক্তিকে ওই পদে নিয়োগ দিতে প্রায় সব আয়োজন চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নিয়োগবোর্ড বর্জন করেছেন ওই বোর্ডে থাকা সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান। নিয়োগবোর্ড বাতিল চেয়ে তিনি আজ জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানাবেন বলে জানিয়েছেন। আর গতকাল মঙ্গলবার অনিয়মের প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী। তারা বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন।
বিদ্যালয় সূত্র মতে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৬ জন প্রার্থী আবেদন করেন। মিটিংয়ে বাছাই কমিটি সকলকেই বৈধ বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। তবে ১৬ জুন নিয়োগবোর্ড বসে। নিয়োগবোর্ড বর্জনকারি ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমাকে আগের দিন অর্থাৎ ১৫ জুন নিয়োগবোর্ড বসানোর কথা জানানো হয়। বোর্ডে ১৬ জন বৈধ প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ৫ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। আর মৌখিক পরীক্ষায় হাজির হন মাত্র ২ জন। সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে নির্বাচিত প্রার্থীর সাথে গোপনীয়তা রক্ষা করায় অন্য প্রার্থী উপস্থিত হননি জেনে আমি নিয়োগবোর্ড বর্জন করি। নিয়োগবোর্ড বাতিলের দাবিতে তিনি জেলা প্রশাসককে বুধবার স্মারকলিপি দেবেন।’ (প্রস্তুতকৃত স্মারকলিপির কপি এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে)। তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে আলিমুন্নেচ্ছা স্কুলের শিক্ষক শাহিনকে নিয়োগ দিতে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের সভাপতি সব অনৈতিক আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। এ জন্য করোনার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও তড়িঘড়ি করে নিয়োগ বোর্ড বসানো হয়েছে’।
এদিকে অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ হতে চলার খবরে এলাকাবাসী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা নিয়োগবোর্ড বাতিল ও অনিয়মের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিকেলে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘এতো বড় অনিয়মের খবরে এলাকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষুব্ধ। তারা নিয়োগবোর্ড বাতিল চায়। সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে কোনভাবেই অনিয়ম হতে দেওয়া হবে না’। ইছাপুর গ্রামের বাসিন্দা হোসেন গাজী বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকার মানুষ এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বুকভরা বাঁওড়ের সাবেক সম্পাদক ও মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সিরাজুল ইসলাম বলেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা রাস্তায় নেমেছি। প্রয়োজনে আরও কর্মসূচি দেব’। জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই বলেন, নিয়োগবোর্ড শাহিনুর রহমানকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে। অর্থ নিয়ে তাকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়নি। আসাদুজ্জামান নিয়োগ বোর্ড বর্জন করেছে দাবি করলেও তিনি তো রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতির অভিযোগে এলাকাবাসী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা মানববন্ধন করেছে কিনা সেটা তার জানা নেই।