কেশবপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভাসমান সবজি চাষ

0

জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর) ॥ কেশবপুরের হরিহর নদীর বুকে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে ১৫ যুবক স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। যাদের বসতভিটা ছাড়া জমি নেই এমন তারা ওই নদীর শেওলা দিয়ে ধাপ তৈরি করে তার ওপর বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করেছেন। এতে তাদের সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
জানা গেছে, হরিহর নদীতে নাব্যতা না থাকায় শেওলায় পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। ওই নদীর তীরবর্তী মধ্যকুল রাজবংশী পাড়ার জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে না পেরে বেকার হয়ে পড়েন। এ সময় ওই নদীর শেওলাকে কাজে লাগিয়ে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। গত মার্চ মাসে কৃষি বিভাগ ভাসমান বেডে সবজি চাষের ওপর মধ্যকুল ব্লকের রাজবংশী পাড়ার ২০/২৫ জন কৃষক-কৃষাণীকে প্রশিক্ষণ দেয়। মধ্যকুল ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকরা নদীর শেওলা প্রথমে স্তুপ করে রাখেন। শেওলা পচে ধাপ তৈরি হলে তার ওপর দেয়া হয় ভার্মি কম্পোস্ট। এরপর সবজির বীজ বোনা হয়। এভাবে প্রতিজন কৃষক ৩/৪ টি বেড তৈরি করে তার ওপর সবজি চাষ করেছেন। রাজবংশী পাড়ার গোরাচাঁদ সরকার জানান, তিনি ওই নদীতে ৫টি ভাসমান বেড করেছেন। তাতে লাল শাক, সবুজ শাক, গীমা কলমি, পুইশাক, ডাটা শাক এবং ভাসমান বেডের ওপর মাচা (বান) করে লাউ ও চালকুমড়ার চাষ করেছেন। কোন প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই তিনি বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন। এতে তিনি সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তাকে দেখে ওই পাড়ার ২০/২৫ জন কৃষক এ পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, যাদের কৃষি জমি নেই তারা এই পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করলে লাভবান হবেন। মধ্যকুল রাজবংশী পাড়ায় সবজি আবাদের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ ভাসমান বেডে সবজি ও মশলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষক লাভবান হওয়ায় ভাসমান বেডে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।