ঝিকরগাছার ইকরাম কাজীর বিরুদ্ধে ৪৯ দিনে এক কনেকে ২ বার তালাক একবার বিয়ে দেবার প্রমান মিলেছে

0

তরিকুল ইসলাম, ঝিকরগাছা (যশোর)॥ যশোরের ঝিকরগাছায় বাল্য বিবাহ পড়ানো আলোচিত কাজী ইকরাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাত্র ৪৯ দিনের ব্যবধানে এক কণ্যাকে ২ বার তালাক ও একবার বিবাহ দেয়ার প্রমান মিলেছে। গতকাল এলাকাবাসী নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহের প্রমানাদিসহ স্থানীয় সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন, নাভারন ইউনিয়নের হাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাক হোসেনের কণ্যা জিনিয়া খাতুন গত ৬ ফেব্রয়ারী ২০২০ ইং তার সাবেক স্বামী হাড়িয়া গ্রামের কবির হোসেনকে তালাক প্রদান করে। এর মাত্র ২১দিন পর ২৭ ফেব্রয়ারী পার্শ্ববর্তী বায়সা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে নজরুল ইসলামের সাথে ইকরাম উদ্দিন কজীর (যেসব সীলমোহর ওই অফিস থেকে সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে) বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের মাধ্যেমে ১ শত ৫০ টাকার স্টাম্পে বিবাহ দেয়। উক্ত বিবাহের মাত্র ২৮ দিন পর অর্থাৎ গত ২০ মার্চ-২০২০ ইং সদ্য বিবাহিত স্বামী নজরুল ইসলামকে আবরো তালাক প্রদান করে জিনিয়া। ফলে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক কোন আইনের তোয়াক্কা করেননা এসব কাজীরা। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার নাভারন ইউনিয়নের কুন্দিপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে তার ছেলে বাবলুর রহমানের সাথে করিমালী আলিম মাদ্রাসার ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী করিমালী গ্রামের জিন্নাত আলীর কণ্যা ইরানী খাতুন (১৩) কে বাল্য বিবাহ পড়ানোর ঘটনায় আলোচিত কাজী ইকরাম উদ্দিন ও তার শশুরের ইব্রাহিম শেখের বিরুদ্ধে সৌচ্চার হয়ে বিচার দাবি করেছেন গ্রামবাসি। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার সাথে জড়িত আলমগীর হোসেন, তার ছেলে বাবলু, কাজী ইকরাম উদ্দিন ও তার শশুরের বিরুদ্ধে শুক্রবার বিকালে ইরানী খাতুনের পরিবার ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়া জানতে পেরে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমী মজুমদারের নির্দেশে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার সুলতানা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। পরিদর্শণকালে তিনি ওই স্কুল ছাত্রী ও তার পিতা-মাতার সাক্ষাতকার নেয়। এসময় অভিযুক্ত কাজী ইকরাম উদ্দিনের অফিস থেকে অসংখ্য স্বাক্ষরিত সাদা স্টাম্প, বেশকিছু জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধনসহ নোটারী পাবলিকের মাধ্যেমে বিবাহ পড়ানোর বেশ কিছু সীলমোহর উদ্ধার করেছেন। আজ রোববার সকাল ১০টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে কাজী ইকরাম উদ্দিন ও তার শশুর ইব্রাহিম শেখকে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয় নাভারন পুরাতন বাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আওরঙ্গজেব জানিয়েছেন, ইউনিয়নের বিবাহ রেজিস্টার ইকরাম উদ্দিন ও তার শশুর দীর্ঘদিন ধরে সরকারী নির্দেশ অমান্য করে অবৈধ ভাবে বাল্য বিবাহ পড়িয়ে থাকেন। ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার এ ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে অর্থের বিনিময়ে বারবার ধামাচাপা পড়েছে। এবারো ওই মাদ্রাসার শিক্ষক শওকত আলী ও ঝিকরগাছা কাজী সমিতির এক নেতা বিভিন্ন স্থানে দেনদরবার শুরু করেছেন বলেও জানান আওরঙ্গজেব। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কাজী ইকরাম উদ্দিন বলেন, উক্ত নোটারী পাবলিকের সীলমোহর স্থানীয় মজিদ মৌহুরী রেখে গেছেন এবং ওই বাল্য বিবাহের ঘটনা তিনি জানতেন না বলে জানান।