করোনা ও আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত যশোরের কৃষক পায়নি কোন সহায়তা

0

আকরামুজ্জামান ॥ মহামারী করোনা ভাইরাসের পাশাপাশি সুপার সাইকোন আম্পানের কারণে যশোরের কৃষিখাতে ব্যাপক তি হয়েছে। বিশেষ করে সবজি, ফল, ফুলসহ গাছ-গাছালির যে য়তি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠা এ অঞ্চলের চাষিদের পে সম্ভব হচ্ছে না। পরবর্তী আবাদ করার মতো টাকা পয়সাও কৃষকের হাতে নেই। কৃষি বিভাগের প থেকে তিগ্রস্ত এসব কৃষককে প্রণোদনার আওতায় এনে সহযোগিতার কথা বলা হলেও এসব কৃষকের পাশে কেউ নেই। এখনও পর্যন্ত সরকারের কোন সহযোগিতা বা প্রণোদনা পাননি বলে জানিয়েছেন তারা। যশোর কৃষি বিভাগের হিসেব মতে গত ১৫ মে সুপার সাইকোন আম্পানের কারণে যশোরাঞ্চলের ফসলের ব্যাপক তি হয়। সবজি, আম, লিচু, কাঁঠাল, তরমুজ, পানসহ মোট ৩২ হাজার ৫১৬ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ২১ মে সরকারের কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এক সংবাদ সম্মেলনে তিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে তাদের সার, কীটনাশক, বীজ দেয়াসহ নানাভাবে প্রণোদনা দেয়া হবে বলে ঘোষণাও দেন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী দীর্ঘ দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও যশোরের কৃষকরা কোনো সহযোগিতা পাননি। আদৌ পাবেন কী না তার নিশ্চয়তাও পাচ্ছেন না তারা।
কৃষকরা বলছেন, একের পর এক দুর্যোগে কোটি কোটি টাকার সবজি তে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া করোনার কারণে সাধারণ মানুষকে অনেকে সবজি ত্রাণ হিসেবে দিয়েছেন। সরকার যদি এই মুহূর্তে তাদেরকে সহযোগিতা বা বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা না করে তাহলে কৃষক চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলে তারা জানান। আব্দুলপুর গ্রামের কৃষক হযরত আলী বলেন, মার্চ মাসে েেত যখন সবজি ভরপুর তখনই বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু। এ কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে এবং সকলকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়। বিভিন্ন জেলায় শুরু হয় লক ডাউন। অফিস-আদালত, কল-কারখানা সব বন্ধ হয়ে যায়। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা গাড়ি চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। ফলে কৃষক যে সবজি আবাদ করেছিলেন তা েেতই পঁচতে শুরু করে। বাজারে নিয়েও ব্যাপারি বা ক্রেতা না পেয়ে সবজি বিক্রি করতে পারেননি। এরপর যখন সরকারি উদ্যোগে সারাদেশে সবজি পাঠানো শুরু হয় তখন ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয় এ অঞ্চলে। সর্বশেষ ১৫ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে তাদের সব স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করে দিয়ে যায়। তিনি বলেন, আমরা মনে করেছিলাম সরকার আমাদের প্রণোদনার মধ্যে আনবে কিন্তু এখনও তার কোনো আলামত দেখতে পাচ্ছি না। এ অবস্থায় সামনে কী ভাবে চাষ করবো তা বুঝে উঠতে পারছি না। একই কথা বলেন কৃষক আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, ঝড় পরবর্তী সময়ে কৃষি বিভাগের প থেকে আমাদের তালিকা নিয়ে যায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো খবর নেই। কৃষকদের ব্যাপক তি হয়েছে। একের পর এক দুর্যোগে অনেক কৃষক একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আকতারুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে যশোরের কৃষিখাতে তির সার্বিক চিত্র কৃষি বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত সরকারের প থেকে কোনো অনুদান দেয়া হয়নি। তবে পর্যায়ক্রমে এসব কৃষকের নানাভাবে সরকার সহযোগিতা দেবে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। তিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা এবং ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করতে প্রণোদনা দেবে সরকার। ওই প্রণোদনা হাতে পৌঁছলে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সার ও বীজ দিয়ে সহায়তা করা হবে।