যশোরে করোনায় প্রথম আ.লীগ নেতার মৃত্যু : দুই শিশুসহ আক্রান্ত ৪

0

বিএম আসাদ ॥ করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণে যশোর জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১শ’ ৩১ জন। এর ভেতর প্রথম একজন আওয়ামী লীগ নেতা মারা গেছে। এদিকে অভয়নগরে ভাই-বোনসহ আরও ৪ জন গতকাল নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে। জানা গেছে, অভয়নগরের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন (৮০) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে খুলনা গাজী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিন তার মরদেহ এনে সন্ধ্যায় উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। উপজেলা করোনা কমিটি তাকে দাফন করে। অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। পরীক্ষায় গত শুক্রবার তার শরীরে করোনা ভাইরাস ধারা পড়ে। তখন তাকে খুলনার গাজী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেনের যশোর জেলায় করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর শিকার হলেন আমির হোসেন। করোনায় আক্রান্তের দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে অভয়নগর উপজেলা। প্রতিদিন সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল (৭ জুন) যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নমুনা পরীক্ষার ২১টি রিপোর্ট এসেছে। তাতে শিশু ভাই-বোনসহ ৪ জন নতুন আক্রান্ত হয়েছে অভয়নগরের নওয়াপাড়ায়। এ নিয়ে যশোর জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১শ’ ৩১ জন। অভয়নগরে যে ৪ জন গতকাল আক্রান্ত হয়েছে তাদের ভেতর একজন শিশুপুত্র। তার বয়স ৩ বছর। অপরজন কন্যা। বয়স ৮ বছর। তারা ভাই-বোন। অন্য দু’জনের ভেতর একজনের বয়স ৪০ বছর। ৫৩ বছরের একজন বয়স্ক ব্যক্তি রয়েছে আক্রান্তদের মধ্যে। করোনা পরীক্ষার জন্য গতকাল সিভিল সার্জন অফিস ৮৫টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। উপজেলাওয়ারি পরিসংখ্যানে জানা গেছে, অভয়নগরে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ যাবত সেখানে ২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের বেশিরভাগের বসবাস শিল্প শহর নওয়াপাড়ায়। ২য় অবস্থানে রয়েছে চৌগাছা উপজেলা। সেখানে ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অনুরূপ শার্শা উপজেলায় ১৫ জন, কেশবপুর উপজেলায় ১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সদর উপজেলায় ১২ জন, মনিরামপুর উপজেলায় ১১ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ৮ জন ও বাঘারপাড়া উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছে ৩ জন। সব মিলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১শ’ ৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৯৪ জন সুস্থ হয়েছে। ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬ জন হাসপাতালের আইসোলেশনে এবং ৯৪ জন হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে যশোর সিভিল সার্জন ও এমওসিএস ডা. মো. রেহনেওয়াজ জানিয়েছেন। যশোরে অধিক সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিয়ে খোদ স্বাস্থ্য বিভাগ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির সদস্যসচিব সিভিল সার্জন ও মনিটরিং সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, যশোরের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী কি পদক্ষেপ নেয়া হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। ব্যবস্থা নেয়া হবে ঢাকা থেকে। ঢাকা থেকে নির্দেশ আসলেই তা বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে, যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায়ের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, শংকরপুরে বেসরকারি হাসপাতাল জিডিএল করোনা হাসপাতাল হিসেবে নেয়া হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে। জেনেসিস হাসপাতালটি তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। অতি সত্ত্বর যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আইসিইউ চালু হবে।