ফের খুলে দেওয়া হয়েছে যশোরের সব ধরনের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থেকে ফের খুলে দেয়া হয়েছে যশোরের সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে গতকাল প্রথম দিনে সীমিত সংখ্যক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান খুললেও সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা ঠিক আগের মতই ছিলো। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গেল ১০ মে দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু তখন ঈদবাজারে মানুষের চাপ ক্রমে বাড়তে থাকে। ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মানছিলেন না। অন্যদিকে, জেলায় করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যাও প্রতিদিন বেড়েই চলছিলো। এমন পরিস্থিতিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ক’দিন পর গত ১৭ মে নির্বাহী আদেশ জারি করে ১৯ মে থেকে ফের দোকান বন্ধ করে দেন।
গত বুধবার বেলা ১১টায় যশোর সার্কিট হাউজে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ। সভায় যশোরে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, করোনা সংক্রান্ত সেনা তৎপরতায় যশোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লে. কর্নেল নেয়ামুল, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপকুমার রায়, প্রেসকাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় দীর্ঘ আলোচনা শেষে সার্বিক দিক বিবেচনায় বৃহস্পতিবার থেকে দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। তবে এক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রত্যেক দোকানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। পরস্পরের সঙ্গে নির্ধারিত দূরত্বও বজায় রাখতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সিদ্ধান্তের পর গতকাল দোকান খোলার প্রথম দিনে সীমিত সংখ্যক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুললেও অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিলো। তবে খুলে দেওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশতেই ছিলনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো প্রবণতা। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দোকানের সামনে হাঁতধোয়ার ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার কথা থাকলেও তা দেখা যায়নি। কিছু সংখ্যক ক্রেতারা বাজারে এ দোকান থেকে অন্য দোকান ঘোরাঘুরি করলেও তাদের অধিকাংশের মুখে ছিলোনা মাস্ক। দোকানিদের মুখে মাস্ক থাকলেও ছিলোনা হাতে গ্লাভস। এ বিষয়ে যশোর ছিট কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবু হোসেন বলেন, ঈদের পর জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ (বৃহস্পতিবার) প্রথম দোকান খুলছেন ব্যবসায়ীরা। অনেক ব্যবসায়ী এ সিদ্ধান্তের কথা এখনও জানেন না। আমরা ব্যবসায়ীদের কাছে জেলা প্রশাসনের বার্তা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। বিশেষ করে করোনার মত ভয়াবহ ভাইরাস থেকে নিজেদের রক্ষা করতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রথম দিন হয়তো কোনো কোনো ব্যবসায়ী এ বিষয়ে কিছুটা অবহেলা করেছেন। তবে আগামীতে তা করতে দেয়া হবেনা। আমাদের স্বার্থেই এসব নিয়ম মেনে চলা হবে। পাশাপাশি ক্রেতাদেরও এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন এ ব্যবসায়ী নেতা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শফিউল আরিফ বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা মানবিক বিবেচনায় দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান খুলতে পারেন। তবে এসব শর্ত ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।