অন্য রকম ঈদ

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক অন্য রকম ঈদুল ফিতর উদযাপন হল গত ২৫ মে সারা দেশে। ছিল না ঈদগাহে শ’ শ’ মানুষের ভিড়। ঈদ জামাতের মাঠের পাশে ছোট মেলা,সেখানে রঙ-বেরঙের বেলুনের বাহার অথবা শিশুর মুখে ভেপু বাশির শব্দ। চির চেনা ঈদগাহ ছিল জনশূন্য। সকালে ঘুম থেকে উঠে মুসুল্লিরা মুখে মাস্ক লাগিয়ে জায়নামাজ হাতে নিয়ে গেছেন মসজিদ পানে। মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এমন এক ভিন্ন রূপের ঈদ উযাপন হল। নামাজ শেষে কোলাকুলি থেকে বিরত থেকেছেন প্রায় সবাই। ঈদে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের বাড়িতে বেড়ানোর ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির রেওয়াজ থাকলেও এ বছর তেমনটা হয়নি। কেবল ফোনে কথা বলে বা ভিডিও কলে খোঁজ-খবর নেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে ঈদের আনন্দ।
যশোর জেলা ইমাম পরিষদ সূত্রে জানাগেছে, বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি ইসলামী ফাউন্ডেশন এবার ঈদে বিধিনিষেধ জারি করে। যেকারণে এবার ঈদুল ফিতরের নামাজ ঈদগাহের পরিবর্তে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানসহ অন্যান্য ঈদগাহ ময়দানে কোনো ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল আটটায় কালেক্টরেট মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এখানে নামাজ আদায় করেন জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকতারা। জেলার বিভিন্ন মসজিদেও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়। নামাজ শেষে ছিল না অতি পরিচিত কোলাকুলির দৃশ্য।
জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, যশোর পৌরসভার আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় মোট ১৬৫ টি জামে মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদে সকাল সাতটা থেকে একাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শহর ছাড়াও আট উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার মসজিদগুলোতেও একই নিয়মে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মসজিদের ভেতরে জায়গা না হওয়ায় অনেক স্থানে মসজিদেও বাইরে কাতারবন্দি হয়ে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। ঈদের নামাজে এবার শিশু ও বৃদ্ধদের উপস্থিতি খুবই কম ছিলো। সবাই মাস্ক ব্যবহার করে ঈদের নামাজ আদায় করেন। এদিকে একইভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন মুসল্লীরা । রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ তার পরিবারের সদস্য এবং কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গভবনের দরবার হলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপ্রধান তার পরিবারের সদস্য এবং কয়েকজন গুরুত্বপূর্ন সরকারি কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে ঈদের নামাজ আদায় করেন। এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত হয়নি। শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানের ঈদ জামাতও এবার অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের প্রধান জামাত এবার বায়তুল মোকাররম মসজিদেই অনুষ্ঠিত হয়েছে।