যশোরে মানবাধকিার কর্মী ও সংবাদিক পরিচয়ে চাদাঁবাজি : ৪ প্রতারক আটক

0

তরিকুল ইসলাম, ঝিকরগাছা (যশোর)॥ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়ার কথিত দুই সাংবাদিক সহ চারজনকে চাঁদাবাজির দাবীতে যশোর কোতয়ালি থানার পুলিশ আটক করেছে। শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছে বলে জানাগেছে। আটককৃতদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। যশোর সদরের কাশিমপুর মোল্যাপাড়ার বাসিন্দা মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, তার বড়ভাই আব্দুল হাই সিদ্দিক একজন নিকাহ রেজিস্টার (কাজী)। তিনি বড়ভাইয়ের সাথে বিয়ে পড়ানো কাজ করে থাকেন। ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে লিটন এবং কেফায়েতনগর গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে অঞ্জলী খাতুনের বিয়ে হয়। তিনি তাদের নিকাহ রেজিস্টরের দায়িত্ব পালন করেন। বিয়ের পর লিটন কেফায়েতনগরে স্ত্রীর মায়ের বাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে থাকতেন। এরই মধ্যে লিটন তার টাকা দিয়ে একটি গরু কেনেন। কিন্তু জামাই লিটনের অজান্তে তার শাশুড়ি গরুটি বিক্রি করে দেন। এই টাকা তিনি বড়জামাইকে দিয়েছেন। এ বিষয়টি লিটন জানতে পেরে রাগারাগি করে স্ত্রীকে নিয়ে ফুলবাড়ি গ্রামে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। এ ঘটনার পর অঞ্জলী খাতুনের মা তার মেয়ের বাল্য বিয়ে হয়েছে বলে প্রচার করেন। এরই সুযোগ নিয়ে উল্লিখিত প্রতারকরা গত শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে কাশিমপুর মোল্যাপাড়ায় তার (শহিদুল ইসলাম) বাড়িতে আসেন। তারা এ সময় নিজেদের মানাবধিকার কর্মী এবং সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি অঞ্জলী খাতুনের বাল্য বিয়ে পড়ানোর কাজ করেছেন। খুলনা বিভাগীয় কার্যালয় থেকে তারা এই বাল্য বিয়ে সম্পর্কে তদন্ত করতে এসেছেন। বাল্য বিয়ে পড়ানোর অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। নতুবা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেয়া হয়।
পুলিশ জানায়, সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মানবাবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ৪ জনকে আটক করেন। এ সময় তাদের কাছে মানবাধিকার কর্মী এবং সাংবাদিকতার পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়। কিন্তু তারা কোন পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় স্থানীয় লোকজন নিশ্চিত হন তারা প্রতারক। পরে আটক ৪ প্রতারককে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। যোগাযোগ করা হলে ফুলবাড়ি ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই কানু চন্দ্র জানান, আটককৃতরা অখ্যাত পত্রিকার সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মী হিসেবে পরিচয় দিলেও কোন পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি। ফলে সন্ধ্যায় তাদের কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করা হয়। কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, আটক প্রতারকদের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম। রোববার আটককৃতদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বাঁকড়া গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াহেদ আলীর ছেলে বিল্লাল হোসেন পেশায় গরুর দালাল। সম্প্রতি সে একটি মরা গরু বিক্রি করে বিক্রি করেছিল বলে মুকুন্দপুর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সাধারন সম্পাদক জানিয়েছিলেন। যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হয়েছিল। এছাড়া মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুল জব্বার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গোন্ডি পার হয়নি। ছোট বেলায় পিতার সাথে আইসক্রিম ও ভাজা বিক্রয় করে বেড়াত। পরে ভারতে নারী পাচারকারী হিসাবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। তার নামে নারী পাচারসহ বিভিন্ন মামলাও হয়েছিল। লিয়াকত আলীর ছেলে তারিফুল ইসলাম শিমুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী ও আনছার ভিডিপির সদস্য।