এস১১ ডরমেটরি: সিঙ্গাপুরে করোনার সবচেয়ে বড় ক্লাস্টার

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ভালো আয়ের আশায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষ সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার এখন এই শ্রমিকরাও। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত ৯ হাজারের মধ্যে দুই হাজারই শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত আবাসিক ভবন এস১১ ডরমেটরি থাকেন। দুই সপ্তাহ আগে শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই ডরমেটরি ও শ্রমিকদের করোনায় আক্রান্তের বিষয়য়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মঙ্গলবার।
সিঙ্গাপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদেশি শ্রমিকদের জন্য যেসব ডরমেটরি নির্মাণ করা হয়েছিল তার একটি হচ্ছে এস১১। লোহার ওপর নির্মিত চারতলা ভবনগুলোর প্রতিটি কক্ষে ১২ থেকে ২০ জন করে শ্রমিককে রাখা হয়। গাদাগাদি করে থাকায় এই ডরমেটরিতে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। করোনা সংক্রমণের পর সেই চিত্রটিই দেখা গেছে। সিঙ্গাপুরের করোনায় আক্রান্তদের ৭৫ শতাংশই এই ডরমেটরিতে থাকা শ্রমিক। এ পর্যন্ত সরকার ১৯টি ডরেমেটরির শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে। রয়টার্সকে হাবিবুর রহমান নামে এক বাংলাদেশি শ্রমিক জানিয়েছেন, এস১১ ডরমেটরির যে কক্ষটিতে তিনি থাকেন সেখানে আরো ১১ শ্রমিক থাকেন। প্রাকৃতিক কাজটি সারার জন্য তাদেরকে যেতে হয় গণটয়লেটে।
হাবিবুর বলেন, ‘যদি এক জন আক্রান্ত হয়, তাহলে সহজেই এটি অন্যদের মধ্যে সংক্রমিত হয়। আমরা এখন আমাদের কক্ষের মধ্যে আটক অবস্থায় আছি। সবাই ভয় পাচ্ছে। আমরা স্রেফ আল্লাহর কাছে দোয়া করছি…পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছি। করোনার প্রাদুর্ভাবের প্রথম দিকে সিঙ্গাপুর পরিস্থিতি বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছিল। তবে ডরমেটরির কারণে এর সফলতা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতার দিকেই মোড় নিয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাবের পর সিঙ্গাপুর সরকার জানিয়েছিল, তারা ডরমেটরি অপারেটরদের শ্রমিকদের নিয়মিত জ্বর পর্যবেক্ষণ, পরিচ্ছন্নতার জন্য উৎসাহিত করা এবং সংক্রমণ এড়াতে সাধারণ এলাকাগুলোতে না যাওয়ার পরামর্শ দিতে বলেছিল। তবে নিজামুল নামে এক শ্রমিক জানান, এস১১ ডরমেটরি দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা ছিল বিরল। এছাড়া সরকারের কোয়ারেন্টাইন ঘোষণার মাত্র এক দিন আগে আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য ভবনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেশিন বসানো হয়। এস১১ ডরমেটরির বাসিন্দারা করোনার সংক্রমণের জন্য পরিচ্ছন্নতা, পূর্ব সতর্কতার অভাব এবং ডরমেটরির পরিবেশের গতানুগতিকতাকে দায়ী করেছেন। কেউ কেউ ভাইরাস মোকাবিলায় সিঙ্গাপুর সরকারের ভূমিকারও প্রশংসা করেছেন। তবে সবাই আতঙ্কে আছেন করোনার সংক্রমণের।