যশোরে দুপুর ২টায় মুদি দোকান বন্ধ হওয়ায় কমেছে লোকসমাগম

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ যশোর জেলা প্রশাসনের নতুন সময় বেধে দেয়ার কারণে বড় বাজারে অনেকটা শৃংখলা ফিরে এসেছে। মুদি দোকানগুলো দুপর ২টায় এবং কাঁচাবাজার সন্ধ্যা ৭টায় বন্ধ হচ্ছে। এর ফলে গত কয়েকদিনে বাজারে লোকসমাগম যে অস্বাভাবিকহারে বেড়ে গিয়েছিল তা অন্তত নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এর আগে কাঁচাবাজার ও মুদি দোকানগুলো খোলা থাকতো সকাল থেকে বেশ রাত পর্যন্ত। তাছাড়া ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য সব ধরনের দোকান বন্ধ থাকছে। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় এর থেকে রক্ষায় সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল এবং পরবর্তিতে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। একই সাথে কাঁচাবাজার, মুদি দোকান ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য সব দোকানপাট, গণপরিবহন, ট্রেন চলাচল, স্টিমার-লঞ্চ বন্ধ রয়েছে।
অন্যান্য দোকানপাট বন্ধ থাকলেও কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান খোলা থাকায় সারদিন ও রাত যশোরের বড় বাজারে ভিড় লেগে থাকতো। অস্বাভাবিকহারে লোকসমাগম বেড়ে যাওয়ায় জেলা প্রশাসন নতুন সময়সীমা বেধে দিতে বাধ্য হয়। গত ১ এপ্রিল যশোর পৌর কমিউিনিটি সেন্টারে বাজার ব্যবসায়ীদের সাথে জেলা প্রশাসন এক বৈঠকে বসে। ওই দিন থেকে মুদি দোকানগুলো দুপুর ২টা ও কাঁচাবাজার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা রাখার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ। ওই ঘোষণার পর থেকে বড় বাজারে ক্রেতাদের চলাচলে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। যেহেতু দুপুর ২টার পরে মুদি দোকানগুলো আর খোলা থাকবে না তাই এ সময়টা নিত্যপণ্য কেনার জন্য মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, মুদি দোকানগুলোয় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। কাঁচাবাজারেও মানুষের সমাগম কম না। মাছ বাজারেও একই অবস্থা।
এদিকে বাজারে পর্যাপ্ত মালামালের সরবরাহ থাকলেও বিক্রি তেমন আশানুরুপ নয় বলে ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন। বড় বাজারে ‘মনিরামপুর ভান্ডার’ এর অন্যতম স্বত্বাধিকারী গোলাম মোস্তফা বাবলা জানান, অনেক বড় একটা এলাকা নিয়ে এ বাজার বিস্তৃত। প্রতিদিন এ বাজারে অফিস ফেরত মানুষ, আদালতে আসা মানুষ,দিনমজুর তাদের কাজ শেষে কেনাকাটা করতে আসতেন। এখন সবকিছু বন্ধ থাকায় বাজারে শুধুমাত্র স্থানীয়রা ছাড়া আর কোনো মানুষ আসছে না। কিন্তু এ বাজারে মালামাল আগের মতই আসছে। যে কারণে সবজির দাম এখন বেশ খানিকটা কমে বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি উচ্ছে বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা, ঢেঁড়স ২৫ টাকা, কাঁচকলা ২০ টাকা, টমেটো ১০ টাকা, কুমড়ো ১৫ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, আলু ২০ টাকা, পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, রসুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগির বিক্রি নেই বললে চলে। প্রতি কেজি ব্রয়লার ৯০ থেকে ১০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ও সোনালী মুরগি ২০০ টাকা, কাঠেরপুলে গরুর মাংসের কেজি ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে না, দোকানগুলো বন্ধ। কাঠেরপুলে গরুর মাংস বিক্রেতা ‘নাদিম বিফ হাউস’ এর স্বত্বাধিকারী মো নাদিম বলেন, এখন সব হাট বন্ধ, গ্রামে গ্রামে গিয়ে ঘুরে গরু কিনে আনতে হচ্ছে। তারপরও খুব একটা ক্রেতা নেই। অনেক মাংসের দোকানই বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন মানুষ আতঙ্কে বাজারে আসছে না।