সন্ধ্যা না গড়াতেই রাজধানীজুড়ে মধ্যরাতের নিস্তব্ধতা

0

চারদিকে সুনসান নিরবতা। যত দূর চোখ যায় রাস্তাঘাট একেবারে ফাঁকা। রাস্তার এদিক-সেদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ ছাড়া কোনো যানবাহনও চোখে পড়ে না। দূরের কোনো মসজিদ থেকে ভেসে আসছে এশার নামাজের আজান। দুজন মুসল্লীকে মুখে মাস্ক পড়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে যেতে দেখা যায়। তাদের পাশ কাটিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটে গেল একটি অ্যাম্বুলেন্স।Dhaka-1একজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালককে দেখে এগিয়ে আসে এক যুবক। মধ্যবাড্ডা যাবে কি-না জিজ্ঞাসা করতেই রিকশাচালক ১৮০ টাকা ভাড়া হাঁকেন। কিছু একটা বলতে গিয়েও না বলে রিকশায় উঠে বসে ওই যুবক। রিকশাচালককে ফাঁকা রাস্তায় উল্কার গতিতে ছুটে যেতে দেখা যায়। তখনও ঘড়িতে ৮টাও বাজেনি। রাজধানীর নিউমার্কেটের অদূরে নীলক্ষেত মোড়ে এমনই এক দৃশ্যের অবতারণা হয়।Dhaka-2

Dhaka-3

রাজধানীর কোথাও যেন লোকজন দলবেঁধে চলাচল বা আড্ডা মারতে না পারে, সেজন্য সকাল থেকেই পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যরা তৎপর ছিল। বার বার মাইকে ঘোষণা করা হয়েছে, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হবেন না। নিজে বাড়িতে থাকুন ও পরিবারের সদস্যদেরকে করোনা ঝুঁকিমুক্ত রাখুন। সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে আজ সন্ধ্যা নামতে না নামতেই রাজধানীজুড়ে গভীর রাতের নিস্তব্ধতা নেমে আসে। সরেজমিন রাজধানীর ধানমন্ডি, লালবাগ, মতিঝিল, রমনা ও তেজগাঁও এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তাঘাট একেবারেই ফাঁকা। মানুষজনও তেমনটা নেই। স্বাভাবিক সময় রাজধানীতে মধ্যরাতেও রাস্তাঘাটে এর চেয়ে বেশি মানুষ দেখা যায়।Dhaka-4

বৃহস্পতিবার ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। অন্যান্য বছর এ দিনটিতে কাকডাকা ভোর থেকে রাত ৮-৯টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, সোহরাওয়ার্দী ও রমনা উদ্যান, জাতীয় সংসদভবনসহ বিভিন্ন এলাকা লোকে লোকারণ্য থাকে। কিন্তু আজ চিত্র ছিল ভিন্ন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারিভাবে ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নগরজুড়ে বিভিন্ন স্থানে বর্ণিল আলোকসজ্জা করা হয়। নগরবাসী ঘর থেকে বের না হওয়ায় বর্ণিল আলোকসজ্জা ম্লান হয়ে যায়। এছাড়া নগরবাসীকে ঘর থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় আজ সন্ধ্যার পরপরই নগরজুড়ে মধ্যরাতের নিস্তব্ধতা নেমে আসে।