মাস্ক পরে সংবাদ সম্মেলনে বাম নেতারা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ মাস্ক পরে সংবাদ সম্মেলন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতাকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করে সমন্বিত উদ্যোগ ও পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দসহ আট দফা দাবি জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। রোববার (২২ মার্চ) রাজধানীর পুরানা পল্টন মৈত্রী মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ও কমিউনিস্ট লীগ নেতা নজরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা করোনাভাইরাসের বিস্তার ও তা মোকাবিলায় সরকারের বেহাল প্রস্তুতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস সংক্রমণকে বিশ্বব্যাপী মহামারি ঘোষণা করলেও বাংলাদেশের সরকার গত তিন মাসেও যথাযথ প্রস্তুতি না নিয়ে চরম উদাসীনতা, দায়িত্বহীনতা ও অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছে। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, এই মহামারির হাত থেকে কেউ একা বাঁচতে পারবে না। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ মহামারি মোকাবিলা করতে হবে। তিনি এনজিও ঋণের সুদ মওকুফ ও কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পুঁজিবাদ করোনা মহামারি সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে-এটা আজ প্রমাণিত। তিনি গার্মেন্টস, হকারসহ শ্রমজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।
খালেকুজ্জামান বলেন, বর্তমান সরকারের কথা ও কাজে চরম অসঙ্গতি থাকায় তাদের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। আইইডিসিআরসহ (সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান) সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশবাসীকে জনসমাগম ও ভিড় এড়িয়ে সতর্কভাবে চলা ও ঘরে থাকার পরামর্শ এবং ইভিএম ভোটে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কথা বললেও সরকার জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচন করে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। এটা সরকারের দ্বি-চারিতার প্রমাণ। তিনি বলেন, করোনা আতঙ্কের সুযোগে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ যারা দিন আনে দিন খায় তাদের অবস্থা খুবই নাজুক। কমরেড খালেকুজ্জামান দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সারাদেশে সেনাবাহিনী প্রদত্ত রেটে রেশন প্রদান করার আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সংকট মোকাবিলায় তাৎক্ষণিকভাবে কমপক্ষে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ও দীর্ঘমেয়াদে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা, আর্মি স্টেডিয়ামসহ দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলার স্টেডিয়ামকে ফিল্ড হাসপাতালে পরিণত করা এবং তারকা হোটেলসহ জেলার উন্নতমানের হোটেলগুলো প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ব্যবহার করাসহ আট দফা প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা বাচ্চু ভূঁইয়া, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।