বৃটেনে ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে ১০ হাজার মানুষ: জনসন

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বৃটেনে ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটা জানিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি জনগণের প্রতি পরিবারের সদস্যদের অকাল মৃত্যুর ব্যাপারে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। এদিন বৃটেনজুড়ে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপের রুপরেখা প্রকাশ করেন তিনি। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, ভাইরাস মোকাবিলায় অন্যান্য দেশের তুলনায় জনসন সরকার বেশ হালকা পদক্ষেপ নিয়েছে বলে তীব্র সমালোচনা করেছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও বিশেষজ্ঞরা। জনসন নিজে বৈশ্বিক মহামারীটিকে ‘একটি প্রজন্মের সবচেয়ে ভয়াবহ স্বাস্থ্য সংকট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ভাইরাসটি মোকাবিলায় বৃটিশ সরকারের ঘোষিত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিদেশে স্কুল সফর বাতিল, জ্বর ও কাশিতে সেল্ফ-আইসোলেশন, বৃদ্ধ ও দুর্বল ব্যক্তিদের প্রমোদতরীতে ভ্রমণ ইত্যাদি। তবে অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর মতো স্কুল বন্ধ করা হয়নি, বড় ধরনের জমায়েত, অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা করা হয়নি।
সরকারের দাবি, খুব দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিলে তাতে জনগণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে প্রয়োজনে কঠোর অবস্থান নেয়া হবে।
জনসনের পদক্ষেপে বৃটেনের অভ্যন্তরীন দেশগুলোর মধ্যে পদক্ষেপের তারতম্য দেখা দিয়েছে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে তেমন জোরদার পদক্ষেপ না নেয়া হলেও, আগামী সপ্তাহ থেকে স্কটল্যান্ডে বড় ধরণের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে স্কটিশ সরকার। অন্যদিকে, প্রতিবেশী দেশ আয়ারল্যান্ড ও ফ্রান্সে সকল স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৃটেনে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯৬ জন। মারা গেছেন ১০ জন। ধারণা করা হচ্ছে, মে বা জুন মাসে ভাইরাসটির সংক্রমণ সর্বোচ্চ আকার ধারণ করবে। ইংল্যান্ডের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ক্রিস হুইটি জানান, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পুরো দেশের ৮০ শতাংশ জনগণ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হতে পারে ও মৃতের হার দাঁড়াতে পারে ১ শতাংশে। এমনটি হলে, ভাইরাসে মারা যাবেন ৫ লাখের বেশি মানুষ। বৃহস্পতিবার জনসন বলেন, ভাইরাসটি আরো বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে। অনেক পরিবার তাদের প্রিয়জনকে সময়ের আগে হারিয়ে ফেলবেন।
তবে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেরেমি হান্ট সরকারের পদক্ষেপগুলোর সমালোচনা করেছেন। আরো জোরদার পদক্ষেপ না নেয়ায় তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন। বলেছেন, যেসব দেশ আগেভাগে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে তারা সেটি নিয়ন্ত্রণে সফলতা পেয়েছে। সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরাও। বলছেন, এসব পদক্ষেপ অপর্যাপ্ত ও সীমিত। ইস্ট এঙ্গলিয়া ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিষয়ক অধ্যাপক পল হান্টার বলেন, এসব পদক্ষেপ কোন বড় ধরণের প্রভাব ফেলবে না। এসবের কোনোটাই বৃটেনে সংক্রমণ রোধে কার্যকরী হবে না।