খুলনায় চাঞ্চল্যকর তয়ন হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

0

খুলনা ব্যুরো ॥ খুলনা মহানগরীর চাঞ্চল্যকর কাজী তাসফিন হোসেন তয়ন (৩২) হত্যা মামলার রায়ে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। রবিবার বেলা সাড়ে ১২টায় খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে দন্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার করে টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন কাজী মুরাদ হোসেন, কাজী রওনাকুল ইসলাম রনো, কাজী মো. ফরহাদ হোসেন, জাকির হোসেন ও মো. সাইফুল ইসলাম। এর মধ্যে জাকির পলাতক রয়েছেন। তবে, মামলার অপর দুই আসামি কাজী সাব্বির হোসেন ফাহিম ও কাজী মাসুমকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। নিহত তয়ন খালিশপুর থানাধীন মুজগুন্নী মেইন রোডস্থ কাজী ফেরদৌস হোসেন তোতার ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, কাজী তাসফিন হোসেন তয়ন ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট বিকেলে নিখোঁজ হন। ওই ঘটনায় তার পিতা কাজী ফেরদৌস হোসেন তোতা ৮ সেপ্টেম্বর খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর খালিশপুর থানা পুলিশ মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সন্দেহজনক আসামি সাইফুল ইসলাম গাজীকে গ্রেফতার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল স্বীকার করেন তিনি ও তার সহযোগীরা ২৮ আগস্ট রাত ৯ থেকে সাড়ে ৯ টার মধ্যে তয়নকে হত্যা করে মৃতদেহ বয়রা পুলিশ লাইনের পশ্চিম পাশের মোস্তফা কামালের ডোবা জমির উত্তর পাশের কচুরিপানা ও হোগলা বনের মধ্যে চাপা দিয়েছেন। সাইফুলের দেখানো মতে ওই ডোবা থেকে পিলার ও বাঁশের সাথে বাঁধা অবস্থায় তয়নের আংশিক গলিত লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। পরে আসামি সাইফুল ও অপর আসামি কাজী মুরাদ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা জানান, তারা দু জনসহ আরও কয়েকজন তয়ন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। জবানবন্দিতে কাজী ফরহাদ হোসেন, কাজী সাব্বির হোসেন ফাহিম, কাজী রওনাকুল ইসলাম রনো, কাজী মাসুম ও মো. জাকিরের নাম উল্লেখ করা হয়। পুলিশ পরে মো. জাকির ছাড়া বাকি আসামিদের গ্রেফতার করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো. মিজানুর রহমান ৭ জনকে অভিযুক্ত করে একই বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চলতি বছরেই মামলাটি চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক হিসেবে চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুলনার বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করা হয় (দ্রুত মামলা নং-০১/২০২০)। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলী ছিলেন বিরেন্দ্র নাথ সাহা। চার্জশিটে উল্লিখিত ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য প্রদানের পর উভয়পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শেষে আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।