যশোরে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে বক্তারা : মুজিব বর্ষের ৬ মাসের মধ্যে উদীচী হত্যার বিচার নিশ্চিত না হলে কঠোর আন্দোলন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুজিব বর্ষের ৬ মাসের মধ্যে যশোর উদীচী হত্যাকান্ডের বিচার করা না হলে সারাদেশের সাংস্কৃতিক কর্মীদের সংগঠিত করে গোটা বাংলাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়া হবে। যশোরের প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ থেকে বক্তারা এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে উদীচী হত্যাকান্ডের ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে উদীচী ট্রাজেডির মতো একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের বিচার দীর্ঘ ২১ বছর ধরে আটকে আছে।
বক্তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যদি ক্যাসিনো স¤্রাট, ক্যাসিনো খালিদ ও পাপিয়ারা গ্রেফতার হয় এবং তাদের বিচার শুরু হয় তাহলে সেদেশে এমন একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের বিচার হবে না তা মেনে নেয়া যায় না। দীর্ঘ এ বিচারহীনতার এ সংস্কৃতি আর আমরা দেখতে চাই না। তাই দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে দেশবাসীকে সাথে নিয়ে রাজপথে তীব্র আন্দোলন গড়ে দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। উদীচী যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহবুবুর রহমান মজনুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উদীচী ঢাকার সহসভাপতি প্রবীর সরদার। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উদীচী যশোরের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট কাজী আব্দুস শহীদ লাল, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, উদীচীর খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক সুখেন রায়, সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম, সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি একরাম-উদ-দ্দৌলা, জাসদ নেতা অশোক রায়, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, সিপিবি নেতা অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু, উদীচী যশোরের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই এমন একটি মামলার বিচার আটকে রাখা হয়েছে। হত্যাকান্ডের পর এই ২১ বছর ধরে যারা ক্ষমতায় এসেছেন তারা শুধু একে অপরের দিকে কাঁদা ছোঁড়ছুঁড়ি আর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে গিয়ে মামলার স্বাভাবিক যাত্রাকে ব্যাহত করেছেন। বক্তারা বলেন, উদীচী হত্যাকান্ডের পর নিহতের পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাসন দিলেন অথচ ২১ বছর পর পুলিশ এখন তা আবার কেড়ে নিচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে বেশি বড় প্রধানমন্ত্রী না পুলিশ ? একটি স্বাধীন দেশে সাংস্কৃতিক কর্মীদের সাথে এমন আচরণ মেনে নেয়া যায় না। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। বক্তারা আরও বলেন, দেশে এখন যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া কোনো কিছু হয় না, এজন্য এ বিচারে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবারো দ্বারস্থ হতে হবে। তিনিই পারবেন এ হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে। কারণ তার নির্দেশে ইতোমধ্যে দেশে অতীতে ঘটে যাওয়া বড় বড় ঘটনার বিচার হয়েছে। তাই সবাইকে আবার এ হত্যার বিচারের জন্য সোচ্চার হতে হবে। সমাবেশ শেষে টাউন হল ময়দানে উদীচী হত্যাকান্ডের স্থানে শহীদদের স্মৃতির জন্য নির্মিত শহীদ বেদীতে উদীচীসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে শহীদদের স্মরণে মশাল প্রজ্জলন করা হয়।